শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শ্রম মন্ত্রণালয়ের অনুদান প্রদানে কার্যকর পদক্ষেপ নেই : হয়রানির অভিযোগ

ট্যাম্পাকো ট্র্যাজেডি

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

টঙ্গী থেকে মোঃ হেদায়েত উল্লাহ : টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়লস লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় হোসাইন আহমেদ রাসেল (২৫) নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। রাসেল সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ঘাঘুয়া গ্রামের হাসান আলীর ছেলে জানা গেছে। তিনি ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় মেশিন হেলপার ছিলেন। তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৩৫-এ দাঁড়িয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়। নিহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯ জনের পরিচয় জানা গেছে। বাকি ৬ জনের পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। এখনো নিখোঁজের তালিকায় রয়েছেন ১১ জন। আহত আরো ৩৪ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ট্যাম্পাকো অগ্নিকা-ে হতাহতদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষিত অনুদানের মধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত নিহতদের ২৫ জনের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের ৩০ জনকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে ট্যাম্পাকো অগ্নিকা-ে হতাহতদের জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঘোষিত অনুদান প্রদানে এখনো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নিহতদের স্বজন ও আহত শ্রমিকরা। তারা ইনকিলাবকে জানান, টঙ্গী শ্রম অফিসে প্রয়োজনীয় সকল প্রমানপত্রসহ যাওয়ার পরও আমাদেরকে নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমাদেরকে বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনের মেয়রের সুপারিশ লাগবে। আবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের নিকট সুপারিশের জন্য গেলে তিনি বলেছেন, আবেদন পত্র জেলা প্রশাসক থেকে সত্যায়িত করলে আমি সুপারিশ করবো।
এব্যাপারে শ্রম অধিদপ্তরের অধীন টঙ্গী শ্রম অফিসে যোগাযোগ করলে শ্রম পরিদর্শক সঞ্জয় দাস ইনকিলাবকে জানান, ঘোষিত অনুদান প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হতাহতদের স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমি কথা বলেছি। তবে আপনার কাছে কেউ গেলে তাকে আমাদের অফিসে পাঠিয়ে দিবেন। আমরা মেয়রের সুপারিশ ও স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করবো।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করলে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, শ্রম অফিস সাহায্যের আবেদন গ্রহণ করে প্রয়োজনে আমাদের কাছ থেকে হতাহতদের তালিকা নিতে পারেন।
এদিকে গতকাল দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সেনাবাহিনীর ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড ও দমকল বাহিনীর কর্মীরা গতকালও বিরামহীন উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬ হাজার ৪শ’ টন ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে আইএসপিআর সূত্রে জানানো হয়েছে। ভারি যন্ত্রপাতির সাহায্যে কারখানার পূর্বপাশ থেকে ধ্বংস্তুপ সরিয়ে ভেতরের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপ অপসারণ করে আর কোন মৃত বা জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত ১১ জনই নিখোঁজ রয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গী মডেল থানার এসআই সুমন ভক্ত জানান, নিখোঁজদের ডিএনএ টেস্টে পরিচয় সনাক্ত হলে ঢামেকের মর্গে সংরক্ষিত ৬ লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায় ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় ১০ সেপ্টেম্বর সকালে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রতিষ্ঠানটির চারটি ভবনের তিনটি ধসে পড়ে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। গুরুতর আহত আরো ৩৪ জন এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে সঙ্কটাপন্ন ২ জনের অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত বলে জানা গেছে। এখনো নিখোঁজ আছেন ১১ জন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন