কোন্দল নিরসনের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে এমপি হিরু এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দেয়ার পরও জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অবসান ঘটছে না।
এমপি হিরু সভাপতি থাকাকালে সভা-সমাবেশে দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নিন্দাবাদ বা কাদা ছোড়াছুড়ি হত। এখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের নেতৃত্ব দুই দলকে গোলাগুলির মত ভয়াবহ ঘটনায় জড়িয়ে দিয়েছেন। এই অভিযোগ মাধবদীর পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিকের। তিনি বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদে আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই জাকারিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পৌরসভায় হামলা চালিয়েছে। জাকারিয়া পিস্তল উঁচিয়ে গুলি বর্ষণ করেছে। সিসিটিভিরএই ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ নেতা মো মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, জিএম তালেব হোসেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পৌর মেয়র মোশারফ হোসেন মানিককে দাওয়াত না দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সভা করেন।
পৌর মেয়রসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সভাস্থলে গিয়ে এই ঘটনা জিজ্ঞাসা করায় আনোয়ার হোসেন ও জাকারিয়া তাদের সাথে মারমুখী আচরণ করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মাধবদী আওয়ামী লীগের দুই দলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এদিকে মাধবদীতে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শান্তিপ্রিয় নেতাকর্মীরা গোলাগুলির ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, মাধবদীতে গোলাগুলির ঘটনা নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলেরই জের। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন তথা জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব পরিচালিত হয় নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের একজন নেতার নেতৃত্বে। যিনি নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টির মহানায়ক। কোটি কোটি কালো টাকার মালিক হয়ে তিনি এখন দলের ভিতর উপদল সৃষ্টি করছেন। সাধারণ নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল দলের ভিতর শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তাকেই নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। কিন্তু অব্যাহতি দেয়া হয়েছে দলের দুঃসময়ে যিনি দলের হাল ধরেছেন সেই এমপি হিরুকে। যার নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
সাধারণ নেতাকর্মীরা বলেছেন, কাউন্সিল করে দ্রুত নরসিংদী জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা না হলে কোন্দল আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, সভাস্থলে গোলযোগ সৃষ্টি হলে দুই পক্ষকে সরিয়ে সেখান থেকে ভিন্ন পথে চলে আসি। গোলাগুলির ব্যাপারে আমি কাউকে নির্দেশ দেইনি। ঘটনা সম্পর্কে আমরা কোন কিছুই অবহিত নই। পরে সব জানতে পেরেছি। এদিকে মাধবদীতে গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু পুলিশ এখনো কোন পক্ষের আসামিকে গ্রেফতার বা আটক করতে পারেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন