শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শরণখোলার দুর্নীতিবাজ বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সান্তানুর রহমান খোকন, শরণখোলা (বাগেরহাট) থেকে : বঙ্গোপসাগরে চলতি মৌসুমে ইলিশ শিকারকে কেন্দ্র করে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার মহোৎসব চলছে। হাজার হাজার ফিশিং ট্রলার পাশ না করে সাগরে মাছ ধরে বনবিভাগের জেলে পল্লী দুবলা টহল ফাঁড়ি, বগী ও সুপতি স্টেশনের কতিপয় বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে অলিখিত চুক্তি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়াসহ অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে অধিকাংশ ফিশিং ট্রলারের পাশ না করা, মাছ কম দেখানো ও এক সপ্তাহের মেয়াদী পাশের বাড়তি দিনগুলির রাজস্ব আত্মসাৎ প্রভৃতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে সাগর ও সাগর তীরবর্তী সুন্দরবন এলাকার নদ-নদীতে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে ইলিশ ধরার পরিমাণ অনেক বেশী। এ সুযোগে দুবলা টহল ফাঁড়ি এবং বগী ও সুপতি স্টেশনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিজেদের পকেট ভারী করতে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইলিশ মৌসুমে শরণখোলা, পাথরঘাটা, মোড়েলগঞ্জ, জিয়ানগর, মঠবাড়িয়া, আমতলী, ভান্ডারিয়া, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, মংলা চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, নোয়াখালী, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকার দশ সহস্রাধিক ফিশিং ট্রলার বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ করে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, এসব ট্রলারের অধিকাংশই কন্ট্রাক্ট করে পাশবিহীনভাবে সাগরে প্রবেশ করে ইলিশ মাছ ধরছে। যে সকল ফিশিং ট্রলার এক সপ্তাহের মেয়াদী পাশ গ্রহণ করে ইলিশ আহরণ শেষে ফিরে আসে, তারা নাম মাত্র মাছ দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দুর্নীতিবাজ বন কর্মকর্তাদের সাথে ভাগাভাগি করে তা আত্মসাৎ করে থাকে। এছাড়া, এক সপ্তাহের মেয়াদী পাশের বাড়তি দিনগুলিতে সাগরে অবস্থানকারী ট্রলার ও জেলেদের জরিমানা বাবদ আদায়কৃত টাকা জমা হয় না সরকারী কোষাগারে। এভাবে, সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করে চলছে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি। গোপন তদন্ত হলে এসকল অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবনে কর্মরত জনৈক বন কর্মকর্তা জানান, মোটা অংকের টাকায় পোস্টিং নিয়েছি। এসব টাকা ডিপার্টমেন্টের সব পর্যায়ের পেয়ে থাকে। বগী স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আঃ হক ও সুপতি স্টেশন কর্মকর্তা আঃ হালিম অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, অভিযোগগুলো আংশিক সত্য। তবে, পুরোপুরি নয়। ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে স্টেশনগুলিকে সতর্ক করে দেয়া হবে। এছাড়া, স্মার্ট পেট্রোলিং টিম কাজ করছে। আরো সক্রিয় করা হবে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন