বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

করোনা মহামারিতে আর অবহেলা নয়

| প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২১, ১২:০৪ এএম

করোনারভাইরাস বা কোভিড-১৯, বর্তমানে বাংলাদেশে ভয়ংকর রূপ ধারন করছে। তাই আর মোটেও অবহেলা নয়। অতীতের অসাবধানি ও অবহেলার কথা ভুলে গিয়ে আমরা সকলে মিলে করোনা প্রতিরোধে সংগ্রামি ও সচেতন হই। কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস বা সার্স কোভ-২ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্তমান গাইড লাইন মেনে চলি। এছাড়া চলার পথে প্রতিটা সময়ে আমাদের সকলের একে অপরের সাথে কাছাকাছি চলাফেরা থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখি এবং করোনাভাইরাস সম্পর্কে নিজের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, কর্তব্য পালন এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রতিবেশিকে সচেতন করে তুলি।

র) ককরোনার প্রাথমিক লক্ষণ: ১) জ্বর ২) শুকনো কাশি/ গলা ব্যথা ৩) ক্লান্ত লাগা/ গা ম্যাজম্যাজ করা।
রর) আরও কিছু লক্ষণ: ১) নাক বন্ধ থাকা ২) নাক দিয়ে পানি পড়া, ৩) শরীর ব্যথা, ৪) পাতলা পায়খানা, ৫) শ্বাসকষ্ট।

সাধারনত এ ভাইরাস নাক, মুখ, চোখ দিয়ে মানব শরীরে প্রবেশের চার থেকে চৌদ্দ দিনের মধ্যে এর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া শুরু হয়। তবে বেশীরভাগ রোগির ক্ষেত্রে পাঁচ দিনের মধ্যেই লক্ষণগুলো জানান দেয়। এ অবস্থায় শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে অবশ্যই সিরিয়াস হিসেবে নিতে হবে। কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি/কাশি/থুতূ/কফের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পরে। তাই এ অবস্থায় যেখানে-সেখানে থুথু ফেলা যাবে না, হাঁচি-কাশি এলে মাস্কের ভিতরই দিতে হবে। পরে হাতে গ্লাভস পড়ে মাস্কটি ফেলে দেওয়া উত্তম। আর আক্রান্ত রোগী সর্বদা মাস্ক পড়তে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে থাকতে হবে। আক্রান্ত রোগীর বা যে কোন হাঁচি-কাশির রোগীর ৩ ফুটের মধ্যে যাওয়া উচিত নয়। যদি কোনো আক্রান্ত রোগির জীবানু বা কফ/থুতু/শ্লেষ্মা টেবিল-চেয়ার, দরজার হাতল, সিঁড়ি বা এস্কেলেটারের রেলিং বা দেয়ালে পরে তাহলে, সেখানে সাথে সাথেই কয়েক ঘণ্টা থেকে, কয়েকদিন পর্যন্ত এই ভাইরাস প্রতিরোধি ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এসব জায়গায় অসাবধানতা বশত স্পর্শ করলে অবশ্যই সাবান পানি দিয়ে হাত ধোবেন বা এলকোহল বেইজড হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ২০ সেকেন্ড ধোবেন।

আক্রান্ত ব্যাক্তির করনীয় :
১. প্রথমত, করোনা আক্রান্ত রোগিদের ঝুঁকিপূর্ণ রোগি হিসেবেই ধরে নিতে হবে। তবে, তার সাথে কোনোভাবেই অমানবিক আচরন করা যাবে না, তরুন সমাজের প্রতিনিধিরা যথা সম্ভব হেল্প নাম্বারে কল দিয়ে রোগিটিকে আলাদা করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারনত ৮০% কোভিড-১৯ রোগী, তেমন কোন চিকিৎসা ছাড়াাই ভালো হয়ে যায়। তবে এমনটি মনে করে অবহেলা নয়। সাবধানি ও নিজেকে বেশিরভাগ সময় হোম কোয়ারেন্টাইন ও চিকিৎসকের পরামর্শে থাকতে হবে।

২. দ্বিতীয়ত, ১৬%-১৭% কোভিড-১৯ রোগী গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়। এদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়।

৩. তৃতীয়ত, ৪%-৫% কোভিড-১৯ রোগীর আইসিইউ সেবা লাগতে পারে।
শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, হার্টের অসুখ, ফুসফুসের অসুখের রোগী, এবং অন্যান্য কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম (যেমন, হাসপাতালে ভর্তি যে কোন রোগী) তাদেরই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়াার সম্ভাবনা বেশি। কোভিড ১৯ কে খুব সাধারণ সমস্যা মনে হলেও অবহেলায় জটিল হতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে অসুখ এবং একটি নতুন ইনফেকশাস রোগ এবং ইতোমধ্যেই, এই নতুনভাইরাসটির আরও বেশ কিছু ভিন্ন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে। তাই এখন একজন থেকে অন্যজনে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া, খুব সহজ। আমাদের দেশের সাধারন মানুষের ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অভ্যাস, অতোটা ভালো নয়। তাই কিছু খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে, ভালো অভ্যাস ও আমাদের সচেতনতা, এই সময়ে কোভিড ১৯ মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে।

মাস্ক ব্যবহারের সর্বোচ্চ প্রয়োগ : প্রাথমিকভাবে সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মাস্ক ব্যবহার করা সাজেস্ট করে নাই। মাস্ক শুধুমাত্র হাঁচি/কাশি/জ্বর এর রোগীদের এবং যারা এসব রোগীর স্বাস্থ্যসেবার সাথে নিয়োজিত আছেন, তাদের ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল। কিন্ত এই মুহুর্তে আমাদের দেশে গরম, ঝড়, বৃষ্টি আর বাতাসে প্রচুর ধুলো-বালি। আর ধুলো-বালি ঠান্ডা সর্দি জনিত রোগের কারন। তাই এখন মাস্ক শুধু করোনা থেকে রক্ষা করবে না অন্যান্য বায়ু দুষণজনিত রোগ থেকেও রক্ষা করবে। তাই সবার জন্যই মাস্ক পড়া জরুরী। বর্তমানে সরকারি নীতি হচ্ছে, নো মাস্ক নো সার্ভিস। অর্থাৎ কোন পাবলিক প্লেসেই মাস্ক ছাড়া গমন করা নিষেধ।

এই সময়ে করোনা প্রতিরোধে যা করব ঃ
১. বাহিরে গেলে সুযোগ পেলেই সাবান পানিতে হাত ধুয়ে নিন। নাকে মুখে কখনও অযথা হাত দিবেন না। প্রয়োজন না হলে মাস্ক খুলবেন না। মাস্ক খুললেও হাত ধুয়ে খাবার খান। নিজের আশেপাশের মানুষদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে বারবার অবহিত করুন।

২. হঠাৎ করে হাঁচি-কাশি পেলে, হাতের কনুই এর ভাজ দিয়ে, কিংবা টিসু দিয়ে, মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিতে হবে। তবে টিস্যু ব্যবহার করলে, সেটা যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না।

৩. কারো যদি জ্বর/হাঁচি/কাশি ইত্যাদি থাকে, তার কাছ থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে।
৪. সরাসরি খাবার থেকে এ রোগ হওয়াার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। এটি এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে ছড়ায়।

৫. আমাদের অধিক সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে তবে, দৈনন্দিন কার্যক্রম একেবারে বন্ধ করে রাখা যাবে না ।

৬. ভুলেও হাতুড়ে ডাক্তারের খপ্পরে পরে করোনা ভাইরাসের র্প্রাদুভাবে এন্টিবায়োটিক বা অন্য কোন ওষুধ নিবেন না।

৭. মনে রাখবেন কোভিড-১৯ বাকরোনাভাইরাস একটি ভাইরাসজনিত ব্যাধি। আর এন্টিবায়োাটিক কাজ করে, ব্যাকটেরিয়া জনিত ইনফেকশনের বিরুদ্ধে। সুতরাং কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না।

৮. আপনার জ্বর হাঁচিকাশি শরীর ব্যথা হলে, তা ভাইরাস এর কারণে না কি, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে, সেটা আপনার চিকিৎসক ভালো বুঝবে। সুতরাং, এন্টিবায়োাটিক না খেয়ে, চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন কি করতে হবে।

৯. আপনার বয়স ৪০ এর উপরে হয়ে থাকলে এখনই টিকার নিবন্ধন করে টিকা নিন। এ নিয়ে অবহেলা করবেন না।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোগের মূল চিকিৎসা আপাতত হল, সাপোর্টিভ চিকিৎসা। অর্থাৎ,
১) রোগীকে আইসোলেশন (অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা)-এর ব্যবস্থা করা। এই আইসোলেশন, রোগীর নিজের বাসায়ও হতে পারে আবার, গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে, হাসপাতালেও হতে পারে।

২) জ্বর-গা ব্যথা হলে, জ্বর-ব্যথানাশক ওষুধ দেয়া, প্রচুর পানি পান করানো, শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন দেয়া।
৩) অক্সিজেনের কাজ না হলে, আই সি ইউ তে স্থানান্তরর করে ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা ইত্যাদিকরোনার বর্তমানে উত্তম চিকিৎসা। এই সময়ে আপনি জ্বর গা-ব্যথা সর্দি হাঁচি কাশি বা শ্বাসকষ্ট এসব সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে/হাসপাতলে গেলে, উনি আপনার রেসপিরেটরি আইসোলেশন নিশ্চিত করার পাশাপাশি, অন্যান্য প্রয়োজনীয় টেস্ট এর সাথে, নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলোও করবেন:

১) কমপ্লিটট ব্লাড কাউন্ট, সিআরপি, সিরাম ফেরিটিন সহ প্রয়োজনে প্রোকেলসিটোনিন, ডিডাইমার, সিরাম ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি
২) চেস্ট এক্সরে ও প্রয়োজনে চেস্ট সিটিস্ক্যান
৩) থ্রোট সোয়াব (ক) নাক দিয়ে সোয়াাব-স্টিক ঢুকিয়ে স্যাম্পল কালেকশন এবং খ) মুখ দিয়ে সোয়াাব স্টিক ঢুকিয়ে স্যাম্পল কালেকশন টেস্ট
৪) যদি আপনার কফ থেকে থাকে, তাহলে কফ স্যাম্পল টেস্ট ।

প্রতিরোধে যা মনে রাখা সবচেয়ে জরুরি ঃ
১) বারবার কব্জি পর্যন্ত দুই হাত, সাবান পানি দিয়ে ধোঁয়াকে অভ্যাসে পরিণত করুন ।
২) বারবার নিজের চোখ-নাক-মুখে, হাত লাগানোকে, অপরাধ হিসেবে গণ্য করুন।
৩) কোন লোকের হাঁচি-কাশি-সর্দি থাকলে, তাকে মাস্ক পড়তে বলুন এবং, তার থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
৪) নিজের যদি হাঁচি-কাশি পায়, হাতের কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিন। অথবা, টিসু পেপার দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশি দিন এবং টিস্যু পেপারটি ঢাকনা লাগানো বিনে ফেলে দিন, সাবান পানিতে হাত ধুয়ে নিন।
৫) হ্যান্ডশেক করা বা, জড়িয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন ।

মনে রাখবেন, কেবলমাত্র আপনি আর, আপনার আশেপাশের দুই-একজন উপরের নিয়ম গুলো মেনে চললে কোন লাভ নেই; প্রতিহত হবে না কোভিড-১৯. এই রোগ কেবলমাত্র তখনই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে যখন, সমাজের বেশিরভাগ মানুষই উপরের নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে চলবে। নিয়মগুলো খুব সহজ হলেও, নিয়মিত অনুসরণ করা খুবই কঠিন। সুতরাং, চলুন সমাজের বেশিরভাগ মানুষকে এ নিয়মগুলো জানাই এবং মেনে চলতে সাহায্য করি ।

সন্দেহজনক রোগীর বাড়ীতে পরিচর্যার নির্দেশনাঃ কোভড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগি যার মৃদু সংক্রমণ রয়েছে এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী যার আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই, তাদের জন্য প্রযোজ্য।
১. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিডিসি, আমেরিকা-এর নির্দেশনানুযায়ী পরিমার্জিত- যদি কোন ব্যক্তির জ্বর ১০০ক্ক ফারেনহাইট/৩৮ক্ক সেলসিয়াস এর বেশি এবং কাশি/সর্দি/গলা ব্যথা/শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি থাকে এবং তিনি বিগত ১৪ দিনের মধ্যে নিশ্চিত/সম্ভাব্য কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে থাকেন, তবে ঐ ব্যক্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ‘সন্দেহজনক রোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

২. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহকৃত রোগীদের পৃথকীকরণ, চিকিৎসা ও মনিটরিং, হাসপাতালে হওয়া উচিৎ। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে, যেমন- হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ রোগী যদি চিকিৎসা সেবা যদি অপ্রতুল্য হয় বাহাসপাতালে থাকতে রাজী না হয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ সকল রোগীদের বাড়ীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩. উপযুক্ত বিবেচনা সাপেক্ষে, রোগীরর যদি মৃদু সংক্রমণ থাকে (অল্প জ্বর, কাশি, গায়ে ব্যথা, সর্দি, গলা ব্যথা এবং কোন বিপদ চিহ্ন- শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত কফ, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া, ডায়রিয়া এবং/অথবা বমি, বমি বমি ভাব, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন- নিস্তেজভাব, ঘরের ভিতর থাকা ইত্যাদি না থাকে) এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা, যেমন-শ্বাসতন্ত্র বা হৃদরােগের সমস্যা, রোগ প্রতিরােধ ক্ষমতা দূর্বল করে এমন অসুস্থতা না থাকে, তবে তারা বাড়ীীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যা পেতে পারেন।

৪. কোভিড-১৯ আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী, যাদের আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই, তাদের জন্যও একই নীতি প্রযােজ্য। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন ফোনে অথবা, সম্ভব হলে, বাড়ীতে গিয়ে তাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও উপসর্গের অবনতি হচ্ছে কিনা খোঁজ খবর নিবেন।

রোগীদের জন্য নির্দেশনা ঃ
১) আপনার উপসর্গগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন
২) জ্বর থাকলে নিয়মিত তাপমাত্রা পরিমাপ করুন।
৩) যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয় (যেমন-শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়) তবে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪) চিকিৎসকের/স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে যাওয়ার পূর্বে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং আপনি যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ‘সন্দেহভাজন রোগী’ তা জানান। আপনি পূর্বেই জানালে অন্য সুস্থ ব্যক্তিরা যেন আক্রান্ত না হয়/ সংস্পর্শে না আসে -এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পক্ষে সাবধানতা অবলম্বন করা সম্ভব হবে।
৫) ভ্রমণের সময় এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।
৬) গণপরিবহন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং সম্ভব হলে এ্যাম্বুলেন্স / নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবেন এবং, যাত্রাকালীন সময়ে পরিবহনের জানালা খোলা রাখুন।
৭) সর্বদা শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি (বিশেষ করে- কাশি শিষ্টাচার) মেনে চলুন, হাত উপরের নিয়মে পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং চলাচলের সময় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থানকালে অন্যদের থেকে ১ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখুন।
৮) শ্বাসতন্ত্র/ অন্য কোন প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) কারণে যদি যানবাহনের কোন অংশ নোংড়া হয়, তবে উপরের বর্ণিত নিয়মানুযায়ী জীবাণুমুক্ত করুন।
৯) হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত বাড়ীর বাইরে যাবেন না।
১০) বাড়ীর বাইরের কাজে, হাটে বাজারে অথবা জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গন পরিবহন ব্যবহার, অন্যদের সাথে একই যানবাহন অথবা ট্যাক্সি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন।
১১) আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাদা ঘরে থাকুন এবং অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকুন। তা সম্ভব না হলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দুরে থাকুন (ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন)।
১২) যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসল খানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ঐ স্থানগুলােতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করুন।
১৩) চায়ের দোকানে যাবেন না, চায়ের দোকানের গণ ব্যবহৃত গ্লাসের দ্বারা পানি পান পরিহার করুন। সর্বোপরি প্রাকৃতিক করোনার মহা প্রাদুর্ভাবে নিজেকে একটু সংযত করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচুন অপরকে বাঁচান। ভালো থাকুন।

ডা. মোঃ বখতিয়ার
ব্যবস্থাপনা পরিচালক
খাজা বদরুদদোজা মর্ডান হাসপাতাল,
সফিপুর হাইওয়ে সংলগ্ন, কালিয়াকৈর গাজীপুর।
ইমেইল: info.kbmh@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন