রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : চিৎমরম কর্ণফুলী নদী ও বান্দরবান-রাইখালী সড়কে অবৈধ কাঠ পাচার চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কর্ণফুলী রেঞ্জের চিৎমরম ফ্রিখিয়ং বিট ও কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাইখালী রেঞ্জের তিনছড়ি বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে শতশত কাঠুরিয়া প্রবেশ করে মূল্যবান সেগুন, গর্জন, চাপালিশ, মেহগনি ও গামারী গাছ উজার করে পাহাড়ি চোরাই পথে তিনছড়ি, রাইখালী, ভালুক্যা, নয়া রাস্তা মাথা, গোপালপুরা, সন্দীপপাড়া, ঢংছড়ি, বাঙ্গালহালিয়া মূল সড়ক হয়ে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে মজুদ করা হয়। রাতের আধাঁরে মিনিট্টাক, জীপ, ভটভটি ও বিভিন্ন পরিবহন দিয়ে সড়ক পথে এবং ইঞ্চিন চালিত বোট যোগে কর্ণফুলী নদী দিয়ে চট্টগ্রামশহর বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে।
সূত্র জানায়, কাঠ পাচাররোধে উর্দ্ধতন মহলের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও মাঠ পর্যায়ের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে কাঠ পাচার বন্ধ হচ্ছে না। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকার সুযোগে গত এক সপ্তাহে বিনাবাধায় কাঠ পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। রাঙ্গামাটি সার্কেলের ফ্রিখিয়ং বিট, চন্দ্রঘোনা বন ও শুল্ক পরীক্ষণ ফাঁড়ির নিয়ন্ত্রাধীন কারিগড় পাড়া ষ্পোশাল বন টহল টিম, কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের ষ্পেশাল টিম, রাইখালী তিনছড়ি বিটকাম স্টেশন, বাঙ্গালহালিয়া বন স্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম, দূর্নীতি ও অবহেলার কারণে গত এক সপ্তাহে ১০ হাজার ঘনফুট প্রায় ২ কোটি টাকার কাঠ পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বাঙ্গালহালিয়া স্পেশাল বন টহল টিম, কাপ্তাই রেঞ্জের কারিগড়পাড়া স্পেশাল বন টহল টিম ও কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের বাঙ্গালহালিয়া বিট কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে মাঠপর্যায়ে তাদের কোন সাফল্য নেই। প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা বনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে অবৈধ কাঠ উদ্ধারে উল্লেখ্য যোগ্য কোন ভূমিকা দেখা যায়নি।
চিৎমরম মুসলিম পাড়ার একাধিক গ্রামবাসী জানান, বন কর্মচারীরা ঈদুল আজহার ছুটিতে থাকার সুযোগে শত শত কাঠুরিয়া বনে প্রবেশ করে মূল্যবান গাছ নিধনযজ্ঞ চালায়। আহরিত অবৈধ কাঠ কর্ণফুলী নদী পথে বাঁশের চালি (বোম্বা) আকারে চোরাই ভাবে চিৎমরম থেকে চট্টগ্রাম ভাঁটির দিকে নিয়ে গেছে। এসব চোরাই কাঠ স্থানীয় জেলেদের দিয়ে বিশেষ কৌশলে বাঁশের সাথে কাঠ বেধে পানির নিচ দিয়ে পাচার কার্যক্রম চালায়। মাঠ পর্যায়ের বনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে কাঠ পাচার হয়েছে বলে কাঠ পাচারে নিয়োজিত এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
জনবল কম থাকার কথা স্বীকার করে কর্ণফুলী রেঞ্জের ফ্রিখিয়ং বিট কর্মকর্তা মো. নুরে আলম বলেন, ঈদের ছুটিতে স্টাফ কম থাকায় শতভাগ কাঠ পাচার রোধ করা সম্ভব হয়নি। তবে কাঠ পাচাররোধে মাঠ পর্যায়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন