গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা : বিগত দুই মাসে পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার চারটি ফেরী ঘাটই বিলীন হয়ে গেছে। কোন রকমে ভাঙন কবলিত স্থানে ঘাট স্থাপন করে যান পারাপার স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় রাজবাড়ী সড়ক বিভাগ দেরিতে হলেও সেখানে আরো দু’টো ফেরীঘাট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। যার অংশ হিসেবে রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। যে কারণে জেলা সড়ক বিভাগ চূড়ান্ত অনুমোদন পাবার জন্য সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলেই শুরু করা হবে কাজ। ইতোমধ্যেই রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে একই বিভাগের ফরিদপুর সার্কেলের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে পত্র পাঠানো হয়েছে। ওই পত্রে বলা হয়েছে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ২১টি জেলার জনসাধারণের সুষ্ঠু যাতায়াত, দৌলতদিয়া-ফরিদপুর-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মংলা (দ্বিগরাজ) এন-৭ জাতীয় মহা-সড়কের প্রবেশদ্বার। রাজধানী ঢাকাসহ স্থলবন্দর বেনাপোল এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে আসছে। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ১৮০০-২১০০ ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে।
এ যানবাহনগুলোর মধ্যে ঢাকা-কোলকাতা যাত্রীবাহী কোচ, অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী পরিবহন, ভিআইপিদের গাড়ী বহর, এ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে। সেই সাথে ঈদসহ শীত মৌসুমের ওরশ মাহফিলে যোগদানকারী যানবাহনের বাড়তি চাপতো রয়েছেই।
পত্রে আরো বলা হয়, গত বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে অস্বাভাবিক পানির ঘূর্ণ এবং তীব্র স্রোত দেখা দেয়। যার কারণে দৌলতদিয়ার চারটি ফেরী ঘাটই বিলীন হয়ে যায়। ফলে সেখানে বিকল্প ফেরীঘাট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিআইডবিøউটিসি, বিআইডবিøউটিএ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ঘাট সংশ্লিষ্টরা সেখানে একাধিক ঘাট নির্মাণের জন্য মতামত ব্যক্ত করেছেন। সরেজমিনে গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কার্যালয় থেকে জরিপও করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ফেরী ঘাটের এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনাও পাওয়া গেছে। ওই প্রস্তাবনার আলোকে সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ভাবে অনুমোদনও করেছেন। যার প্রেক্ষিতে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দাখিল করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানান, দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের পাশে এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য এক একর ৬২ শতাংশ এবং জাকের পার্টির কার্যালয়ের পাশে আরেকটি এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের ৯৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবনাটি জেলা সড়ক বিভাগ চূড়ান্ত অনুমোদন পাবার জন্য সড়ক পরিবহন এবং সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলেই শুরু করা হবে কাজ। এতে করে ঘাট সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে। তবে সকল প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক মাস সময় লাগবে। তার আসা আগামী ঈদের আগেই ওই এ্যাপ্রোচ সড়ক দু’টি নির্মাণ করা সম্ভব হবে। ফলে ওই ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন