বর্তমানে নাটোরে করোনা টেস্টে দীর্ঘসূত্রিতায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ রোগীরা। করোনা বাদে অন্যান্য চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের শরানাপন্ন হলে প্রথমে দেয়া হচ্ছে করোনা পরীক্ষা। করোনা পরীক্ষা করতে গেলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। করোনার জন্য নমুনা পরীক্ষা করতে দেয়ার ৭ দিন পর মিলছে রিপোর্ট। এরকম ভাবে চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার কারনে নমুনা পরীক্ষা করতে হতাশ হয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে রোগীরা। রোগী মনে যেমন ক্ষোভ বাড়ছে সাথে সাথে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।
সরকারি চাকুরীজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শরীরটা হঠাৎ করেই ক্লান্ত বোধ হওয়াতে ১০ জুন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নমুনা পরীক্ষা করতে দেই কিন্তু ৪ দিন পার হয়ে যায় কোন ফলাফল দেয় না। আবার অন্য কোন রোগের জন্য ডাক্তারও দেখানো যায় না। পরে বিশেষ অনুরোধে জানা যায় করোনা নেগেটিভ। তখন অন্য ডাক্তার দেখানোর পরে লিভারের সমস্যা ধরা পড়ে। যদি তাৎক্ষনিক করোনা পরীক্ষার ফল পেতাম তাহলে শরীরের অন্য কোন সমস্যার চিকিৎসা তাড়াতাড়ি করতে পারতাম।
আলাইপুরের সোহেল, পন্ডিতগ্রামের আবির, গত বৃহস্পতিবারে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলাম কিন্তু নমুনা না নিয়ে ফেরত পাঠিয়েছিল। এরকমভাবে অনেক করোনা সম্ভাব্য রোগী হয়রান ও হতাশ হয়ে ফেরত যায়। শুকুলপট্টির আজিজ ও শফিক বলেন করোনা সম্ভাব্য রোগীরা যদি নমুনা পরীক্ষা করতে যেয়ে নমুনা দিতে না পারে আবার ৭ দিন দেরীতে করোনার নমুনা পরীক্ষার ফল পায় তবে এর মতো হতাশার আর কিছু নেই।
এ ব্যাপারে নাটোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান প্রতিদিন যে সমস্ত করোনা সম্ভাব্য রোগী আসেন তারমধ্যে ৬০-৬২% রোগী র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট (নাকের নমুনা পরীক্ষা) করে তাৎক্ষণিক রিপোর্ট দেয়া হয়। আর বাকি রোগীদের মধ্যে ১০-১৫ জন রোগীর নমুনা জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়া হয়। তাও আমাদের এখানে যে মেশিন আছে তাতে দেড় ঘন্টায় ৩ টা নমুনা পরীক্ষা করা যায়। সারাদিনে ১০ থেকে ১৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। বাকি গুলা রাজশাহী পিসিআর ল্যাবে পাঠালে সেখানেও সংকুলান না হলে ঢাকা অথবা সিরাজগঞ্জে নমুনা পাঠানো হয়। তারমধ্যে আবার ভিআইপিদের বিশেষ অনুরোধ থাকে। এসব কারণেই ৭ দিন সময় লাগে।
তবে সচেতন নাগরিক খালিদ বিন জালাল বাচ্চু বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে গেলে ২৪ ঘন্টাই নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। যেহেতু প্রত্যন্ত এলাকাতেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে তাই যখনই গ্রামগঞ্জ থেকে করোনার জন্য নমুনা পরীক্ষা করতে রোগী আসবে তখনই নমুনা পরীক্ষা করে তাৎক্ষনিক রিপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে এভাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে থাকলে নাটোরের ১৭ লাখ লোকের কত বছর সময় লাগবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন