মহামারী করোনা আর লকডাউনের কারণে চরম বিপাকে আম পেয়ারা, কলা চাষিসহ ফল বাগান মালিকরা। আম উৎপাদনকারী এলাকা হিসাবে পরিচিত রাজশাহী অঞ্চলের গাছে গাছে এখন আম পাকছে আবার পচে যাচ্ছে। শুরুর দিকে জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে ব্যবসা হলেও এখন কঠোর লকডাউনের কারণে আমের বেচাকেনা প্রায় বন্ধের উপক্রম। গ্রামেও করোনার থাবা বিস্তার করায় গ্রামের মানুষের করোনা হয় না এমন মনোভাবে চিড় ধরেছে। শহরের হাসপাতালে আসা করোনা আর উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ষাট ভাগ গ্রামের। এতে করে তাদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। তাদের বেপরোয়া চলাচলে কিছুটা হলেও লাগাম পড়েছে।
আমের বাজারে পাইকারী এমনকি খুচরো ক্রেতাও নেই। কিছু ফড়িয়া মার্কা ব্যবসায়ী খুব কমদামে কিনে নিয়ে শহরের আম ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে। আমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় শহরের বাজারে আমের দাম চড়া। আমের জাত ভেদে আম আটশো থেকে বারোশো টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও শহরের আড়তে দুই-আড়াই হাজার টাকার নীচে নয়। মোবাইলে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারযোগে তা পাঠাচ্ছে। বনেদী জাতের আম গোপাল, ক্ষিরসাপাতি, লখনা, ল্যাংড়ার পর এখন গাছে গাছে রয়েছে আম্রপালি, ফজলী, আশ্বিনা, বারি-৪ জাতের আম।
রাজশাহীর দূর্গাপুরের আমচাষী রহমত আলী বলেন, তিনি গতকাল পাচশো টাকা মণ দরে ফজলী বিক্রি করেছেন। আর লখনা চারশো টাকা মণ। আম বিক্রি করে আম পাড়া শ্রমিক আর পরিবহনের ভ্যান ভাড়া ওঠেনি। এমন চলতে থাকলে আম গাছে গাছে পচে গেলে আর নামাবেন না।
আম চাষিদের ভাষ্য লকডাউনে ঘরবন্দী বেশীর ভাগ ক্রেতা। সে কারণে বিশেষ ব্যবস্থায় বাজারজাত আর পরিবহন করা হলেও তাতে খুব একটা সুবিধা হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ ও ফল গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের মতে এখনো বাগানে চল্লিশভাগ আম রয়েছে। অনেক আম গাছে পেকে যাচ্ছে। লকডাউনের কারনে কিছু ক্ষতি হচ্ছে। এটা জাতীয় স্বার্থে আমাদের মেনে নিতে হবে।
রাজশাহী জেলা প্রসাশক আব্দুল জলিল বলেন, আমের জন্য শুধু কুরিয়ার সার্ভিস খোলা আছে। আম পরিবহনে বাধা নেই। তবে পাইকারীরা বাইরে থেকে আসতে না পারার কারণে আম বেচাকেনা কম হচ্ছে। শুধু আম নয় পেয়ারা, কলাসহ বিভিন্ন ফল নিয়ে বেশ বিপাকে আছেন চাষিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন