শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আগাম টাকা নিয়ে পণ্য ডেলিভারি নিরাপদ ডটকমের সিইও গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ই-কমার্স সাইট নিরাপদ ডটকমের সিইও শাহরিয়ার খানকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি কম্পিউটার, দুটি ল্যাপটপ, দুটি হার্ড ডিস্ক, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি চেক বই, ১৩টি ডেভিড/ক্রেডিড কার্ড, ২৩টি সিম কার্ড, সার্ভারের তথ্য ও অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, প্রতারণার স্বীকার ইশতিয়াক আহমেদ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর আদাবর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগ মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহরিয়ার খানকে গ্রেফতার করা হয়।
ই-কমার্স সাইট নিরাপদ ডটকমের প্রতারণা সম্পর্কে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার শাহরিয়ার ২০২০ সালের আগস্ট মাসে নিরাপদ ডটকম নামে একটি অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্স সাইট খুলে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে এবং তাদের কাছ থেকে একটি পেমেন্ট গেটওয়ের (এসএসএল কমার্স) মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ হাতিয়ে নেয়। তারা ৫০ শতাংশ ছাড়ে (ডিসকাউন্ট) মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিকস আইটেম ৩০ দিনের মধ্যে হোম ডেলিভারি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের প্রলভিত করে।
তিনি আরও বলেন, তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার এবং এক মাসের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার অর্ডার পেয়ে থাকে। যার মাধ্যমে প্রায় ৭-৮ কোটি টাকা তার ব্যাংক হিসাবে যুক্ত হয়। যারা পণ্য অর্ডার করেছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী ও অল্প বেতনের চাকরিজীবী। প্রাথমিক অবস্থায় তারা কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের পেজে পজিটিভ রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরে অধিক সংখ্যায় অর্ডার এবং অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে।
গ্রাহকরা যখন বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তখন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও মিডিয়ায়র প্রতিকার দাবি করতে থাকেন। যারা চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছেন, তাদেরকে টাকা রিফান্ডের কথা বলে ব্যাংক চেক দিরেও টাকা তুলতে পারেননি কেউ। বারবার চেক ডিজঅনার হওয়ার অভিযোগ আসতে থাকলে প্রতারক গ্রাহকদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।
এ ঘটনায় অসংখ্য ভুক্তভোগীদের পক্ষে জনৈক ইশতিয়াক আহমেদ বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলা দায়ের করেন’ বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে দুই হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইটভিত্তিক ও প্রায় এক লাখের মতো ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্স সাইট চলমান রয়েছে। চটকদার বিজ্ঞাপণে প্রলোভিত না হয়ে মার্কেটপ্লেস যাচাই করে পণ্য অর্ডার এবং অগ্রিম মূল্য পরিশোধের পরিবর্তে ক্যাশ অন ডেলিভারি অর্থাৎ পণ্য বুঝে পেয়ে মূল্য পরিশোধ করলে প্রতারণা এমনকি ভোগান্তি থেকে রেহাই মিলতে পারে বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন