মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নতুন জাপার ঘোষণা সাদ ও এরিকের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। তবে জি এম কাদের কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অনুষ্ঠানে থাকলেও এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক ও এরশাদপুত্র রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ এমপি বারিধারাস্থ ‘প্রেসিডেন্ট পার্কে’ পৃথকভাবে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন। সেখানে রওশন এরশাদের অসুস্থতার কথা জানানো হলেও একাধিক সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি বলেছেন, দলীয় বিবেচনা না করে করোনাকালে প্রকৃত দরিদ্র পরিবারকে প্রতি মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা সহায়তা দিতে হবে। তাহলেই বিপর্যস্ত মানুষ ঘর থেকে বের হবে না, লকডাউন কার্যকর হবে। ডিডিপির শতকরা এক ভাগ বিতরণ করলেই করোনাকালে কর্মহীন মানুষ পরিবারসহ ভালো থাকবে। আমরা বারবার বলেছি, লকডাউন দেয়ার আগে অবশ্যই হতদরিদ্র মানুষের খাদ্য, ওষুধ নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুধায় যার ঘরে দুধের শিশু কাঁদবে, সে কখনোই লকডাউন মানবে না। হতদরিদ্র মানুষের জন্য পল্লী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, সরকার শুধু আশ্বাস দিয়ে বলে করোনার টিকা আসছে। কখন আসবে, কিভাবে আসবে বা কোথা থেকে আসবে তা বলতে পারছে না। তাই করোনার টিকা নিয়ে দেশবাসীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। সারাবিশ্ব যখন টিকা দিয়ে করোনা মোকাবেলা করছে, তখন আমাদের দেশ লকডাউন দিয়ে করোনা মোকাবেলা করতে চাচ্ছে। এটা কখনোই যুক্তিযুক্ত নয়। করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণেই দিন দিন করোনায় মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা এক বছর আগেই বলেছি স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। লকডাউন নয়, চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। সরকারের অবহেলায় করোনার এমন ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সারাবিশ্ব যখন জিডিপির ৫ থেকে ৬ ভাগ চিকিৎসাব্যবস্থায় খরচ করে, তখন আমরা মাত্র ১ ভাগ খরচ করছি। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের বিশাল অংশই লুটপাট হচ্ছে। তাই আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। জেলা-উপজেলা থেকে করোনা রোগী বিভাগীয় শহর ও রাজধানীতে ভিড় করছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলোতে সিট না থাকায় রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর যাদের টাকা নেই তারা টাকার অভাবে মা-বাবাসহ প্রিয়জনদের বিসর্জন দিচ্ছেন। এমন করুণ পরিণতির দেশ আমরা কখনোই চাইনি।

অনুষ্ঠানে দলের কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলমগীর সিকদার লোটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, মো: এমরান হোসেন মিয়া, নাজমা আক্তার এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, জহিরুল ইসলাম জহির, ড. গোলাম মোস্তফা, হেনা খান পন্নি, মো: জহিরুল আলম রুবেল, মো: আরিফুর রহমান খান, আহসান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালুসহ শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বাবার মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এরিক এরশাদ নতুন ‘জাতীয় পার্টি’, ঘোষণা দিয়ে রওশন এরশাদকে দলের আজীবন চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। রাজধানীর বারিধারা প্রেসিডেন্ট পার্কে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে রওশন-বিদিশা-সাদকে নিয়ে জাপার কমিটি ঘোষণা করা হয়। সভার আয়োজন করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। নতুন ঘোষিত এ কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয় এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদকে। কো-চেয়ারম্যান করা হয় এরশাদের বিদিশা সিদ্দিক ও এরশাদের আরেক ছেল রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ এমপিকে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে অবৈধ দাবি করে এরিক এরশাদ বলেন, ‘আমার বাবা যখন অসুস্থ তখন রাতের আঁধারে তাকে জিম্মি করে আমার চাচা জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যান পদে স্বাক্ষর করিয়েছিলেন। এগুলো আটকাতে হবে, প্রতিহত করতে হবে। তার জন্যই জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের মুখে। তিনি অবৈধ চেয়ারম্যান, আমরা তাকে মানি না।’ সাদ এরশাদ এমপি বলেন, ‘আমরা জঞ্জালমুক্ত থাকতে চাই। এই দিনে বাবার জন্য দোয়া করতে চাই। সবার কাছে দোয়া চাই।’ বিদিশা বলেন, ‘আমরা এরিক এরশাদের ঘোষণা মেনে চলব। আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। দুই সন্তানকে পাশে নিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তা দেবো, এরশাদ সাহেব কী করেছেন। সবাইকে সেটা মনে করিয়ে দেবো।’ কাজী মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় জাপার সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন