মৃতের তিন বছর যেতে না যেতেই অবহেলায় পড়ে গেছেন সাবেক স্বৈরশাসক মরহুমদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি বর্তমান সংসদে বিরোধী দল হলেও গতকাল যেনতেন ভাবেই পালিন করা হয়েছে তার মৃত্যু বার্ষিকী। ‘রংপুরের ছাওয়াল’ দুর্বলতায় রংপুরের মানুষের ব্যপক সমর্থন পেলেও স্ত্রী, দুই ভাই, বোনজামাই, বোন, পুত্র, ভাতিজা, বোনের সতিনের পুত্রকে মন্ত্রী, এমপি বানালেও গতকাল সকালে তার মৃত্যু বার্ষিকী অনুষ্ঠানে পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।
দলের চেয়ারম্যান ছোট ভাই জিএম কাদের, স্ত্রী রওশন এরশাদ, পুত্র সাদ এরশাদ এমপিসহ এরশাদ পরিবারের ১০-১২ জন সদস্য দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হননি। এতে করে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার আশায় দলে ঢুকেছেন। দলের প্রতি কারো শ্রদ্ধাবোধ নেই। এমনকি মনে রাখছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানকেও। তাদের ভাষায় পরিবারতন্ত্র ঘিরে ফেলেছে জাপাকে। এরশাদের জাপা আর নেই। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, জনগণের প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করে এরশাদ নিজের ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চেয়েছেন। ফলে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের বিটীম হয়ে গেছে। দলের কর্মীদের মূল্যায়ন না করে পরিবারের সদস্যদের মন্ত্রী-এমপি করেছেন এবং দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন। তারই এই পরিণতি।
রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের ছাড়াও এরশাদের পরিবারের যেসব দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তারা হলেন- জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শরিফা কাদের (জিএম কাদেরের স্ত্রী), যুব সংহতির আহ্বায়ক আসিফ শাহরিয়ার (এরশাদের ভাতিজা), আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাকিব (জিএম কাদেরের নাতি), যুগ্ম আন্তর্জাতিক সম্পাদক আদেল এমপি (এরশাদের বোনের সতিনের ছেলে), ব্যারিস্টার সারা সাওলিন নিশা (এরশাদের ভাগনি বউ), জিএম কাদেরের ছেলে শাসম কাদের, জিএম কাদেরের উপদেষ্টা টুম্পা (এরশাদের ভাগনি), এরশাদ পুত্র সাদ এরশাদ এমপি (যুগ্ম মহাসচিব)।
উপস্থিত নেতাকর্মীরা জানান, এরা সবাই এরশাদ পরিবারের সদস্য। জাতীয় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তারাও এই কর্মসূচিতে আসেননি। বরং মৃত্যু বার্ষিকীকে এক হাজার তেহারির প্যাকেট করা হয়েছে, যা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির একজন নেতা।
শুধু তাই নয় জাতীয় পার্টির ৪১ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের মধ্যে ৩ জন এবং ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২ জন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জাপার অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতাকর্মী এই শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।
এদিকে দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ১৫ জুলাই রাজধানীর জুরাইন রেলগেইটে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন