বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয়া হত টাকা

মূলহোতা আলোচিত এরশাদ সিকদারের সহযোগী মামুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

উন্নত চিকিৎসার প্রলোভনে দেখিয়ে হাসপাতালে দীর্ঘদিন আটকে রেখে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের মুলহোতাসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ওই চক্রের সদস্যরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের দেশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল থেকে ঢাকায় এনে প্রতারণা করে আসছিলো। লাখ টাকার রোগী আনতে পারলে দালালদের ২০ হাজার টাকা বা আসন্ন ঈদে কোরবানির গরু দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।এ চক্রের সাথে জড়িত ঢাকা ও বিভিন্ন জেলার দালালদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স দালালচক্রেরও যোগসাজশ রয়েছে। গতকাল বুধবার কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম। গত মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীতে ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে অভিযান চালিয়ে দালালচক্রের অন্যতম হোতা সাহাদৎ হোসেন মামুনকে (৪৬) গ্রেফতার করে র‌্যাব-২। এসময় তার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা ও ৫৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে মামুনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের স্টাফ মহিন উদ্দিন মামুন (৩৬), রহমত উল্লাহ্ (৩২) ও আকরাম হোসেনকে (৫২) গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, করোনা মহামারির সুযোগে এক শ্রেণির দালালচক্র রাজধানীর কিছু অখ্যাত হাসপাতালের যোগসাজশে সরকারি হাসপাতাল ও জেলার হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে আসে। এই চক্রের মোটা অঙ্কের কমিশনের লেনদেনে হেনস্তার স্বীকার হচ্ছেন অসহায় রোগীরা। অনেক ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটও এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা কমিশনের বিনিময়ে উচ্চ ভাড়ায় ঢাকার বাইরের রোগীদের নির্ধারিত সেসব হাসপাতালে নিয়ে আসে।

স¤প্রতি এমন কিছু তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তের ধারাবাহিকতায় দালাল সাহাদৎ হোসেন মামুনকে আটক করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চক্রটি দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে আসে। এরপর রোগীদের অনর্থক আইসিইউ-সিসিউতে রেখে কিংবা অযথা বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। বিভিন্ন জেলার স্থানীয় সিন্ডিকেটকে লাখ টাকার রোগী আনলে ২০ হাজার টাকা বা কোরবারির গরু কমিশনের অফার দেয়া হতো। স্থানীয় ওই সিন্ডিকেটের সঙ্গে ঢাকার হাপাতালের সিন্ডিকেট ও অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটও জড়িত।

সাহাদৎ হোসেন মামুনের বিষয়ে তিনি বলেন, মামুন খুলনা অঞ্চলের বহুল আলোচিত সন্ত্রাসী এরশাদ সিকদারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো বলে জানা যায়। পরবর্তীসময়ে এরশাদ সিকদারের ফাঁসির পর মামুন ঢাকায় এসে নানা ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে করোনা মহামারির সুযোগে হাসপাতালকেন্দ্রিক এই দালালি শুরু করেন। এছাড়া জাল টাকা-মাদক ব্যবসাসহ অন্য প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। মামুন প্রতারণার মাধ্যমে ২৭টি বিয়ে করে যৌতুক ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। মূলত বিভিন্ন হাসপাতালের নারী স্টাফ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা সাধারণ রোগীর স্বজনদের তিনি এই ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। এদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন