শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি উধাও

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৫ এএম

পশুর হাটের পাশেই মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিক্রি করছেন ফেরিওয়ালা। কোনো কোনো হাটে হাত ধোয়ারও আছে ব্যবস্থা। কিন্তু এসবে ভ্রুক্ষেপ নেই পশু ব্যবসায়ীদের। পশু বিক্রি হবে কি না, সেটা নিয়েই তাদের যত দুশ্চিন্তা। সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইজারাদাররাও তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেন না। ঈদুল আযহা ঘনিয়ে আসায় হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতার উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে এসব হাটে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউ। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নীরব ভূমিকা পালন করায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। গতকাল রোববার দুপুরে কুমিল্লার বদরপুর পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাক। হাটগুলোয় মানুষের গাদাগাদি। একজন আরেকজনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। কেউ দরদাম করছেন, কেউ পশু কিনে গাড়িতে তুলছেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। কারও কারও মাস্ক থাকলেও তা নামানো থুতনিতে, কারওবা কানে ঝোলানো।
নেউরা পশুর হাটে গবাদিপশু কিনতে আসা আনোয়ার ও কামরুল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাটে গরু-ছাগলের দাম বেশি হলেও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই। হাটে কাউকে তদারকি করতে দেখা যায়নি। যে কারণে আমরা বেশ আতঙ্ক বোধ করছি।
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে ইলিয়টগঞ্জ হাটে আসা টমছম ব্রিজ এলাকার মোজ্জামেল হোসেন বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে। কেউ তো সামাজিক দূরত্ব মানছে না। ক্রেতাদের অনেকে মুখে মাস্কও ব্যবহার করছেন না। ব্যবসায়ীরাও ক্রেতাদের কিছু বলছেন না। হুড়োহুড়ি করে গা ঘেঁষে পশুর দরদাম চলছে।
অথচ প্রতিটি হাটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গরুর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখার শর্ত রয়েছে, কিন্তু তা করা হয়নি। এ ছাড়া হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের তাপমাত্রা পরীক্ষার কোনো সুযোগ ছিল না অনেক হাটে। ক্রেতার খুব বেশি চাপ না থাকলেও দূরত্ব বজায় না রেখে কোথাও কোথাও দেখা গেছে মানুষের জটলা।
কালিরবাজার পশুহাটে ইজারাদার তোফায়েল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, আমরা করব কী ? পশুর হাটে অনেক লোক। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও কেউই তা মানছেন না। আমরা বললেও শুনছেন না। মনে হচ্ছে পুরোনো পশুর হাটের রূপ ফিরে আসছে। পশু নয়, এ যেন করোনা ছড়ানোর হাট।
এ বছর হাটে বড় গরুর চাহিদা একটু কম। ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর দামও তুলনামূলক বেশি। তবে ছাগলের দাম কম ছিল। তারপরও ক্রেতাদের অভিযোগ, করোনায় পশুর দাম কম ভেবেছেন তারা। তবে দাম গত বছরের মতোই বেশি হাঁকানো হচ্ছে।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন মোবারক হোসেন বলেন, পশুর হাটের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুসরণ না করলে করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। মাস্ক পরা সবার জন্য বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, জেলার ৪০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত চালু আছে। ইজারাদারদের সতর্ক করছি আমরা। স্বাস্থ্যবিধি কোনোভাবে উপেক্ষিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিনিয়ত হাট পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোনো ব্যত্যয় হলে জরিমানাসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন