স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর খুঁটিতে শাহ জালাল নামের একটি ফেরির ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা। সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বহু মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই এই ঘটনা আদৌ ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন। আবার কেউ কেউ পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রো রো ফেরি শাহ্ জালাল মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট যাওয়ার পথে পদ্মা সেতুর একটি পিলারে ধাক্কা খায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফেরিতে থাকা ২৫ জন আহত হয়েছে। এই ঘটনায় ফেরি শাহ্ জালালের মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে চলাচলরত ফেরি শাহজালাল সঠিকভাবে পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আবদুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি আজ এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
এনিয়ে ফেসবুকে মোঃ রাকেবুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে পদ্মাসেতুতে আঘাত করছে এবং একইসাথে অনেক গাড়ি মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে কোনমতে মানুষগুলো বড় রকমের দূর্ঘটনা হতে রক্ষা পেয়েছে কিন্তু সেতুর পিলারের বড় রকমের ক্ষতি করছে তাই কোনরকম তদন্ত ছাড়াই চালক, ফেরির মালিককে আইনের আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করছি।’’
মাহবুব হাসান লিখেছেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দুইবার পদ্মা সেতুর পিলারে দুইটি ফেরী ধাক্কা দেয়। প্রথমবার ১৬ নং ও এবার ১৭ নং পিলারে। এরপর হয়তো আবারো এমন ঘটবে। আমরা যারা দক্ষিন বঙ্গে বাস করি তারা জানি এই সেতু কতটা প্রয়োজন। এখানে অনেকের মতো আমি বিএনপি জামাতের সংশ্লিষ্টতার কথা ভাবছিনা। বরং এদেশের বেশকিছু বহুরূপী, নির্লজ্জ, স্বার্থবাদী, বেয়াদব, অসৎ অর্থলোভী ব্যবসায়ী নামের কলঙ্ক, (কু)রাজনীতির ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা ইতরগুলোকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এরা নিজের লাভ ছাড়া কিছু বোঝে না। আমার বিশ্বাস এগুলো তাদের কাজ।’’
মোহাম্মদ আলী তুষার লিখেছেন, ‘‘অনেকেই বলছেন ফেরি ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছে। ফেরির মাস্টার কেন মোড় নিলো না বা এটা-সেটা করলো না। ভাই এতোই সহজ যখন মনে হয় ফেরি চালানো, নিজে গিয়ে চালিয়ে দেখিয়ে দিন। ফেরিটা কিন্তু ছোট না। নদীর পানির নিজস্ব স্রোত থাকে, বাতাস থাকে।
আর পদ্মা সেতুর পিলার এমনভাবেই বানানো, ৪ হাজার টনের জাহাজ ধাক্কা দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে জাহাজটিই।’’
এনামুল হুদার মন্তব্য, ‘‘এটা পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে পিলারে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। এদের ধরুন তদন্ত করলে আসল তথ্য বাহির হবে। তা না হলে এরা পরবর্তীতে বড় ধরনের ক্ষতি করবে। তখন চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই হবে না।’’
সৈয়দ নাজমুল হুদা লিখেছেন, ‘‘এতোদিন ভাবা হতো সড়ক পথে দূর্ঘটনা একটি নীরব ঘাতক- এখন তা নদী পথেও বেরে গেছে। এসব মর্মান্তিক দূর্ঘটনা কমাতে- চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের মত কিছু সংকল্পবদ্ধ মানুষ আমাদের খুব প্রয়োজন। আল্লাহ্ সবাইকে হেফাজত করুন।’’
কে এম মাহমুদ লিখেছেন, ‘‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন কোন ষড়যন্ত্র নয় তো! দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পরপর দু'দিন এরকম ঘটনা ঘটেছে। আজ পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাত করেছে রো রো ফেরি। এই ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছে। এমন ঘটনাকে সাধারণ দুর্ঘটনা বলে চিন্তা করাটা উচিত হবে না। অতি দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত।’’
হোসাইন আল ইকবালের দাবি, ‘‘যেভাবে ধাক্কা লাগছে দেখে মনে হয় উনি ইচ্ছেকৃতভাবে এটাকে ধাক্কা লাগিয়ে দেছে পিলারের সাথে। ওনাকে ১০ দিন রিমান্ডে নিলে সব তথ্য বের হয়ে আসবে কি কারণে উনি প্লেয়ারের সাথে ধাক্কা লাগিয়েছে। এত বড় নদী উনি কি কারণে পিলারের কাজ দিয়ে যাচ্ছিল। ওনার ডানে বামে যাবার অনেক সময় ছিল কিন্তু উনি যায়নি এজন্য আমি মনে করি ওনাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হোক।’’
শাফায়াত খান তারেক লিখেছেন, ‘‘পদ্মাসেতুর পিলার গুলোর দূরত্ব একটা থেকে আরেকটা কত? যেহেতু বার বার পিলারে বাড়ি খাচ্ছে তারমানে ফেরিগুলো দুই পিলারের মাঝ দিয়ে যাওয়ার যে স্পেস তা পার হতে সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু নদীতে স্রোত এবং বাতাস আছে। সাথে ফেরিগুলো কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে চালক সব বিষয় ভাবার আছে।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন