‘বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর তিনি এ দাবি জানান। হিন্দু আইনজীবীদের এই নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায় নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের পদত্যাগের জন্য একটি আবেদন করেছি। একই সঙ্গে এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ করেছি। অভিযোগটি বর্তমানে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত করছে। আবেদনে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়। গত ২৩ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন সনাতন ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট করেন। যার দ্বারা সারা বিশ্বের কোটি কোটি সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। উক্ত পোস্টের মাধ্যমে তিনি যথেষ্ট নিম্ন রুচির ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। পরবর্তীতে পোস্টটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ইতোমধ্যে সারা বিশ্ব পোস্টদাতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সোচ্চার হচ্ছে। এই পোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যে উক্ত শিক্ষকের প্রতি তীব্র ঘৃণাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। মানুষ গড়ার কারিগরের এরকম অভদ্র ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের হিন্দু আইনজীবী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাই এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত স্বরূপ অবিলম্বে তার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, এ ঘটনা অসচেতনভাবে কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে উল্লেখ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন হাফিজুর রহমান।
গতকাল রোববার দুপুরে ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, অনেকে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে আমার পোস্টটিতে আহত হয়েছেন। যারা আমার পোস্টটিতে আহত হয়েছেন ও কষ্ট পেয়েছেন, তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
তিনি আরো লেখেন, আমি প্রত্যেকটি ধর্মের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল এবং মনে করি যে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা উচিত নয়। তবুও অসচেতনভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি আমার পোস্টের মাধ্যমে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে থাকি, সেজন্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন