শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

শূন্যপদের চেয়ে বেশি নিয়োগ স্নাতোকোত্তর না করেই ঢাবি শিক্ষক

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ উঠেছে সিন্ডিকেট থেকে। এর মধ্যে ৩ জনকে শর্ত শিথিল করে স্নাতকোত্তর ছাড়াই সুপারিশ করা হয়েছে। সচরাচর বিভাগ থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার নিয়ম থাকলেও বিষয়টি জানেন না খোদ বিভাগীয় চেয়ারম্যানই।

এমনটি ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এ বিভাগের ৪ জন অস্থায়ী প্রভাষকের শূন্যপদে ৯ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। যদিও সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য এভাবে নিয়োগের বিরোধী ছিলেন। শর্ত শিথিল করে নিয়োগ দেয়ার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের খাটো করা হয়েছে বলেও মনে করছেন সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টরা।
সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে ছুটিজনিত শূন্যপদের বিপরীতে চারটি অস্থায়ী প্রভাষক পদে আবেদন আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত শর্তানুযায়ী, প্রভাষক পদে আবেদনকারীকে অবশ্যই ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল অথবা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ও ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া উভয়টিতে প্রথম শ্রেণী অথবা জিপিএ/সিজিপিএ স্কেল ৪-এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫০ অথবা কোনো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমমানের ডিগ্রিপ্রাপ্ত হতে হবে। অথচ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ছুটিজনিত শূন্যপদে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও গত ৩১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ৯ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক সময় কিছু বিভাগ মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়োগ না দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময়ই মেধার ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই ¯œাতক। তারা ¯œাতোকোত্তর করছে। ¯œাতোকোত্তর সম্পন্ন করার পর তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হবে। নিয়োগ কমিটি সুপারিশ করলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অনুমোদন করলে শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ দেয়া যায়।
নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত শিক্ষকরা হলেনÑ ড. মো: শাহরুজ্জামান, মো: সিরাজুর রহমান, শান্তা বিশ্বাস, মো: মিনহাজুল ইসলাম, মো: সাজেদুল ইসলাম, সৈকত চন্দ্র দে, তানভীর আহমেদ, মো: নূরুস সাকিব ও সজীব বড়–য়া। এর মধ্যে ¯œাতোকোত্তর ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও শর্ত শিথিল করে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেনÑ তানভীর আহমেদ, মো: নূরুস সাকিব ও সজীব বড়–য়া।
এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম নুরুল আমিন বলেন, বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। আমরা পত্রিকার পাতা দেখে বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর আগে এ বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের জানা ছিল না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজ্ঞান অনুষদের এক শিক্ষক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হতে হলে ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করতে হচ্ছে। আর বাইরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধুমাত্র ¯œাতক সম্পন্ন করা ছাত্রকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে চরম বৈষম্য করা হয়েছে। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ বলেন, বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন