স্টাফ রিপোর্টার : দেশের ৯ কোটি নাগরিকের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্র ‘স্মার্ট কার্ড’ বিতরণ করা হবে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অপারেটরদের কার্ড প্রতি ৫ টাকা করে সম্মানী হিসেবে ৪৫ কোটি টাকা, প্রচারে ১০ কোটি এবং বিতরণকারীদের যানবাহন ব্যয় ১০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে এ বিতরণ কাজে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে অন্তত আরও একডজন খাতে বাকি অর্থ ব্যয় হবে।
আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০০ দিনে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কর্মপরিকল্পনায় কমিশনের কাছে এ সম্ভাব্য ব্যয় তুলে ধরেছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। সে অনুযায়ী, প্রতিটি স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য প্রায় ৯ টাকা করে ব্যয় হচ্ছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি স্মার্টকার্ড তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দুই ডলার। প্রথমবার স্মার্টকার্ড বিনামূল্যে বিতরণ করা হলেও পরে যে কোনো ধরনের সংশোধন বা হারানো কার্ড তুলতে গেলে নির্ধারিত হারে ফি দিতে হবে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন জানান, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশজুড়ে স্মার্টকার্ড বিতরণের লক্ষ্যে কমিশনের কাছে কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামী ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর ৩ অক্টোবর থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এবং প্রত্যন্ত এলাকা কুড়িগ্রামে এই কার্ড বিতরণ শুরু হবে।
ঢাকার উত্তরা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ডে ৩ থেকে ২২ অক্টোবর স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলবে। আর দক্ষিণে রমনা থানা নির্বাচনী এলাকার ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ থেকে ২৭ অক্টোবর নির্ধারিত বিতরণ কেন্দ্রে বিতরণ চলবে বলে থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবা মমতা হেনা জানান। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেসব কার্ড বিতরণ হবে না, ভোটারকে নিজ নিজ স্ব উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি দিয়ে এবং লেমিনেটেড কার্ড ফেরত দিয়ে সেই কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।
প্রথম দফায় স্মার্টকার্ড মিলবে যেসব কেন্দ্রে
ইসি কর্মকর্তারা জানান, যাদের লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয় নেই তারা নির্ধারিত সিøপ দিয়ে এনআইডি নম্বর জোনে বিতরণ কেন্দ্রে গেলেই স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। চার পর্যায়ে দেশজুড়ে বিতরণ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও কুড়িগ্রাম। দ্বিতীয় পর্যায়ে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন। এর পরে তৃতীয় পর্যায়ে ৬৪টি সদর উপজেলা এবং চতুর্থ পর্যায়ে বাকি সব উপজেলায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। নির্ধারিত সময়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে প্রচারের মাধ্যমে বিতরণের দিন তারিখ ও স্থান জানিয়ে দেবে নির্বাচন কমিশন।
বিতরণ তথ্য:
সারাদেশের মোট স্মার্টকার্ড ৯ কোটি। বিতরণ টিম ৭৫টি (একটি টিমে ২০ জন অপারেট, দেশজুড়ে ১৫০০ জন অপারেটর এবং প্রতি টিমে একজন করে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট)। বিতরণ কেন্দ্র থাকবে ৫ হাজার ২৫০টি (৩৮৬টি সিটি ওয়ার্ড, ৩২০ পৌর ও ৪ হাজার ৫২৭টি ইউপি কার্যালয়)। দৈনিক একজন অপারেটর ১৫০টি করে কার্ড বিতরণ করবেন। সে হিসাবে ৭৫টি টিমের ২০ জন করে অপারেটর দৈনিক সোয়া ২ লাখ বিতরণ করতে পারবেন। এ জন্যে ৯ কোটি ভোটারের জন্য ৪০০ দিন সময় ব্যয় হবে।
উল্লেখ্য, স্মার্টকার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের লক্ষ্যে ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিস নামে এক সংস্থার সঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ইসি। ইসি সচিবালয় বাস্তবায়নাধীন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস-আইডিইএ’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন