বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সাড়া জাগানো ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ এনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। ফেসবুকে বহু মানুষ এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ওই আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
চিকিৎসকদের একটি সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিজ (এফডিএসআর) দাবি করেছে, ডা. জাহাঙ্গীর কবির নানারকম ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তার কর্মকাণ্ডকে অবৈজ্ঞানিক, অসত্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে মনে করে সংগঠনটি।
এফডিএসআর এর দাবি, এসব কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানের নীতিবিরোধী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া কিটো ডায়েটের পরামর্শ দেওয়া নিয়েও সমালোচনা করা হয়। সাত দিনের মধ্যে বিভ্রান্তিকর ও অবৈজ্ঞানিক এসব ভিডিও কনটেন্ট অনলাইন থেকে না সরালে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে শাদ হাসান লিখেছেন, ‘‘হুম, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা তো নেবেই, কারণ! তিনি কোন রকম ঔষধ সার্জারি ছাড়াই সুন্দর সুন্দর ব্যায়াম ও লাইফ স্টাইল টিপস এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে সুস্থ করে তুলছেন, এতে করে ডাক্তার ব্যবসায়ীদের ও দুর্নীতিগ্রস্ত ঔষধ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা লাটে উঠেছে !!ভালো বিশেষজ্ঞদের কদর বাংলাদেশে নাই, সে জন্যই দেশের এই অবস্থা।’’
আসিফুর রহমান খন্দকার ডা জাহাঙ্গীরের প্রশংসা করে লিখেছেন,‘‘ওনার মত অমায়িক মানুষ আমার এই কিঞ্চিত জীবনে আর কাওকে দেখিনি। ওনার লাইফস্টাইল লিড দিয়ে আমি অভিশপ্ত জীবন থেকে সাধারণ জীবনে ফিরে আসতে পেরেছি। ওজন ৩০ কেজি কমাতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। শুধু একটি কথাই বলবো,স্যার মেডিসিন ছাড়া রোগ ভালো করায় অন্যান্য ডক্টরদের গায়ে জ্বালা ধরে গিয়েছে,যা বাস্তব প্রতীয়মান। #WeSupportDrJahangirKabirSir’’
আবরারুল হক আসিফ ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘কে কার সু চিকিৎসা করেছে, সেটা কি বাংলাদেশের মানুষ জানে না!! মূল কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে এমন জায়গা যেখানে আপনি ভালো কাজ করতে গেলেই কিছু লোক আপনার পেছন থেকে টেনে বসবে।একটা কথা মনে রাখবেন, তারাও কৌশল করে আল্লাহ কৌশল করে। তবে, সবচাইতে উত্তম কৌশল কারি হচ্ছেন আমাদের রব।তারা কিছুই করতে পারবে না। আল্লাহ হেফাজত করুক!!’’
জলি খান লিখেছেন, ‘‘ডক্টর জাহাঙ্গীর কবির স্যার, মানুষের জন্য আল্লাহ তা আলার পাঠানো এক নিয়ামত। তার বাস্তব প্রমাণ আমি নিজে, আমি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ই গ্যাসট্রিকে আক্রান্ত হয়ে, অনেক ডক্টর দেখিয়েছি, আর তাদের প্রেসকিশন মতো ই এতো বছর দুই বেলা ঔষধ ইমোপ্রাজল ২০ খেয়ে আসছিলাম। ২০২০ এর জানুয়ারীর ৬ তারিখ শেষ খেয়েছি ওই ঔষধ। জানুয়ারীর ৮ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত ওনার জেকে লাইফ স্টাইল ফলো করে আসছি,, আর আমাকে গ্যাসের জন্য কষ্ট করতে হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। ভাতের জন্য তিনি মানুষের জন্য কাজ করেননা,তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেন। এতে কিছু লোকের সুবিধা কমে যাওয়াতেই তারা ক্ষেপেছে। সময়ে এসব আগাছার ও বিলুপ্তি ঘটবে ইনশা আল্লাহ।’’
জুবাইর তানজিমের মন্তব্য, ‘‘ইসলামিক মাইন্ডের হলেই শেষ! জাহাঙ্গীর কবির কেমন ডাক্তার তা সবাই কম বেশি জানে। ওনার চিকিৎসায় যে কতো হাজারো মানুষ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।কিছু বলতে বা করতে পারছি না- আজ আমি চোখ থাকতে অন্ধ, স্বাধীন হয়েও পরাধীন, মুখ থাকতেও বোবা।’’
আরিফ বিল্লাহ লিখেছেন, ‘‘খুব দুঃখ জনক, আমার আব্বুর ডায়াবেটিস আলহামদুলিল্লাহ উনার ভিডিও দেখে নিয়ন্ত্রণে। এবং আম্মুর ওজন কমে গেছে। এখন সুস্থ আলহামদুলিল্লাহ। আরও অনেকে উপকার পাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা উনাকে হেফাজত করুন।’’
আলা উদ্দীন লিখেছেন, ‘‘আপনারা যে ভূল চিকিৎসা করে, জীবন্ত মানুষ কে মেরে ফেলেন, তার বিষয়ে কিছু বলেন। অসুখ হয় ডান পায়ে কেটে পেলেন বাম পা, রোগাক্রান্ত হয় পাকস্থলী, আর চিকিৎসা করেন, ফুসফুসের, তা ও আবার অপারেশন করে, অস্ত্র সব পেটের ভিতর রেখে আসেন.... সেগুলো কোন চিকিৎসার মধ্যে পড়ে, একটু জানালে, জাতি জানতে পারতো.....ড. জাহাঙ্গীর কবির স্যারের অনেক ভালো কাজের মধ্যে এক দুইটা ভূল হলে জাতি মেনে নিবে...।’’
মেহেদী মালেক লিখেছেন, ‘‘আমার মা প্রতিদিন ৯৮ ইউনিট ইনসুলিন নিত,আল্লাহর রহমতে জাহাঙ্গীর স্যার এর ভিডিও ফলো করে আমার মায়ের একটাও ওষুধ লাগে না। আল্লাহর রহমতে আমার মা বিনা ওষুধে অনেক ভালো আছে। দীর্ঘ ১২ বছর বারডেম হাসপাতালে দৌড়াতে দৌড়াতে জুতার তলা ক্ষয় হইছে শত জোড়া, কিন্তু এক পয়সার ফায়দা হয় নাই বরং মায়ের আরো অবস্থা খারাপ হইছে ধীরে ধীরে। দুঃখ লাগে আমাদের কসাই শ্রেণীর ডাক্তাররা এই লোকের পিছনে লেগেছে। স্যারকে আল্লাহ হেফাজত করবে।এটা যদি কারো বিশ্বাস করতে সমস্যা হয় ইনবক্স নক দিবেন সব ধরনের প্রমাণ দেখিয়ে দিব।’’
তবে মুহাম্মদ রবিউল হাসান রাজু ডা. জাহাঙ্গীরের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘সিদ্ধান্ত টা আরো আগে নেওয়া উচিত ছিল। বিশেষ করে যাদের প্রেশারে সমস্যা তিনি তাদেরকে লবন খেতে বলেন। অথচ একটা সাধারণ মানুষও জানে লবন খেলে হাই প্রেশার বেড়ে যায়। আরো অনেক ভুল তথ্য দিয়ে অনেক মানুষের ক্ষতি করেছেন। অনেক মানুষই উনার অন্ধ ভক্ত। তাই উনার বিরুদ্ধে কথা বললে তার সেটা মানতে চায় না।’’
সিয়াম সোহানুর লিখেছেন, ‘‘বড় বিপদে পড়ার আগেই সাবধান হন। জাহাঙ্গীর কবীর অনেক অবৈজ্ঞানিক পরামর্শ দেন যা শুনতে ভালো লাগে কিন্তু স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন