শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১১ আগস্ট খুলবে শপিংমল চলবে গণপরিবহন

চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ল ১০ আগস্ট মাস্কহীনদের জরিমানা করার ক্ষমতা পুলিশকে দেয়া হচ্ছে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী হাসপাতালে জায়গা নেই, হোটেল খোঁজা হচ্ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

দেশে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউনের মেয়াদ আরো ৫ দিন বাড়িয়ে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১১ আগস্ট থেকে অফিস-আদালত, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সীমিত পরিসরে গণপরিবহন খুলে দেওয়া হবে। তবে টিকাগ্রহণ ছাড়া কেউ কর্মস্থলে আসতে পারবেন না। এক সপ্তাহ ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। করোনা মহামারির মধ্যে মাস্ক না পরে ঘরের বাইরে বের হলে তাদের জরিমানা করার ক্ষমতা পুলিশকে দেয়া হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় চলমান লকডাউন বাড়ানোর চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহে এক কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ন্যূনতম দুটি করে কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। যার ফলে আশা করছি কষ্ট করে ভ্যাকসিন নেওয়ার পেছনে দৌড়াতে হবে না। ৭ আগস্ট থেকে প্রায় ১৪ হাজার ক্যাম্পে এক যোগে টিকা দেয়া হবে। সেখানে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। শ্রমজীবী মানুষ, দোকানদার, বাসের হেলপারদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন না দিয়ে কেউ কোনো কর্মস্থলে আসতে পারবেন না। যার যার এলাকা থেকে ভ্যাকসিন নিতে হবে। দেশে টিকা উৎপাদন করা হবে এ জন্য চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে প্রায় ৪ কোটির বেশি টিকা আসবে।

মন্ত্রী বলেন, কেউ ভ্যাকসিন নিয়েছে কি না, সে তথ্য ওয়েবসাইটে চলে যাবে, কেউ মিথ্যা বলতে পারবে না। দোকানপাট খোলার আগে ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট তিন দিন সুযোগ রাখলাম। এই সময়ের মধ্যে যাতে ভ্যাকসিন নিতে পারে, সেই সুযোগ দিচ্ছি। ১১ আগস্ট থেকে যাতে দোকানপাট খুলতে পারে সভা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস কত দিন চলবে, কেউ জানে না। যত শিগগির সম্ভব নিজেরা বা অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি। সেটা হলে সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেব। চেষ্টা করব যাতে চার-পাঁচ মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন দেশে উৎপাদন করা যায়। আইসিইউর অভাব রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কলেজের কনভেনশন সেন্টারে আগামী শনিবার থেকে ডেডিকেটেড আইসিইউ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন, গ্রাম এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কেন্দ্র করে এই টিকা দেওয়া হবে।
মোজাম্মেল হক বলেন, কিছু রফতানিমুখী শিল্প খুলে দেওয়া হয়েছে। নইলে বিশ্ব বাজার হারাতে হবে। অর্থনীতিকে সচল রাখতে এগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে সঠিকভাবে এনফোর্স করতে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যাতে করে যারা মাস্ক পরবে না তাদের জরিমানা করতে পারে। এ জন্য অধ্যাদেশ লাগবে। আলোচনা হয়েছে, আমরা সেদিকেও যাব। করোনা মহামারির মধ্যে মাস্ক না পরে ঘরের বাইরে বের হলে তাদের জরিমানা করার ক্ষমতা পুলিশকে দিতে যাচ্ছে সরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, হাসপাতালে করোনা রোগীর জায়গা করতে না পারায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বিকল্প হিসেবে হোটেল ভাড়া করার জন্য খোঁজা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালের ৯০ শতাংশ সিটে রোগী ভর্তি আছে। আইসিইউগুলোতে ৯৫ শতাংশ রোগী রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। কাজ চলছে। প্রথম দিকে ৫০০-৬০০ বেড দিতে পারব। পর্যায়ক্রমে এক হাজার বেডে নেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, সবার হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না। সেসব রোগীর জন্য আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি, সেখানে ওষুধপত্র, ডাক্তার-নার্স থাকবে। কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখব। কারণ হাসপাতালের আর জায়গা নেই, হাসপাতাল খালিও নেই। এজন্য হোটেল খুঁজছি।

করোনার সংক্রমণ কমাতে সব ধরনের অফিস বন্ধ রেখে গত ১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করে সরকার। এরপর কোরবানির ঈদের আগে ১৫ জুলাই থেকে আট দিনের জন্য সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়। ২৩ জুলাই থেকে ফের ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। শেষ ধাপের বিধিনিষেধের মধ্যে সব ধরনের শিল্প কলকারখানা বন্ধ রাখা হলেও গত রোববার থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ১২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, ১৬ জন সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, একাধিক সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও আইইডিসিআর পরিচালকসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন