শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

চাকরির লোভে মাওবাদী হওয়ার হিড়িক পশ্চিমবঙ্গে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

বিড়ম্বনায় পড়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের আইনজীবীরা। জামিন হয়েছে কিন্তু ফের আবেদন পড়ছে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার। প্রতিদিন জেলে ঢোকার জন্য আইনজীবীদের কাছে লাইন পড়ে যাচ্ছে জঙ্গলমহলের মানুষদের। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, নারী-পুরুষেরা সকাল থেকে রাত অবধি দাঁড়াচ্ছেন লাইনে। কারণ, সরকারি চাকরি পাওয়ার আশা। স¤প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ১১০ জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী চাকরি পেয়েছেন হোমগার্ড পদে। তারপর থেকেই এই পরিস্থিতি। এক সময় মাওবাদীদের ভয়ে ত্রস্ত থাকত জঙ্গলমহল। একদিকে যেমন মাওবাদীদের ভয়, তেমনই মাওবাদী হওয়ারও আশঙ্কা ছিল। মাওবাদী তকমা দিয়ে জেলে ঢোকানোর ভয় দেখানো হতো একটা সময়। এখন মাওবাদী সাজার হিড়িক পড়েছে। স¤প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুনরায় মাওবাদী পুনর্বাসনের প্যাকেজে জঙ্গলমহল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার কয়েকশো আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীকে চাকরি দিয়েছে। সরকারি প্যাকেজে চাকরিতে বহাল রয়েছেন তারা। এরপরই এই প্রতিক্রিয়া। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের চাকরি পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে সেসবে আমলে নিচ্ছেন না জঙ্গলমহলের এইসব বেকার মানুষজন। কোভিড পরিস্থিতিতে জঙ্গলে না খেতে পেয়ে মরার চেয়ে মাওবাদী হিসাবে আত্মসমর্পণ করলে সরকারি প্যাকেজে সাবলীলভাবে বাঁচা যাবে। তাই কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের কাছে মাওবাদী হওয়ার লাইন পড়ছে প্রতিদিন। আইনজীবীদের কাছে তাদের আবেদন, যে করেই হোক মাওবাদী তালিকায় নাম ঢুকিয়ে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিতে হবে। অনেক আবার প্রয়োজন মতো টাকা খরচ করতেও রাজি। এসব সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন আইনজীবীরা। গত কয়েকদিন ধরেই জঙ্গলমহলের অন্য আদালতগুলোর পাশাপাশি একই চিত্র দেখা যাচ্ছে মেদিনীপুর কোর্টেও। সরকারি চাকরির লোভে মাওবাদী সাজার হিড়িক পড়েছে জঙ্গলমহল জুড়ে । মেদিনীপুর আদালতের আইনজীবী অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, আগে বহু এমন কেস দেখেছি যেখানে জঙ্গলমহলের মানুষ আসতেন মাওবাদী তকমা বাদ দিতে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমানে উল্টো পরিস্থিতি। এখন মানুষ আসছেন মাওবাদী তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে। মাওবাদী তালিকায়, বিশেষ করে যারা একসময় নিজেদের মামলা শেষ করার জন্য বারবার দরবার করেছেন এখন তারাই মাওবাদী তালিকায় নিজেদের নাম ঢোকানোর জন্য হাজির হচ্ছেন। এ নিয়ে আইনজীবী গৌতম মাহিষ বলেন, ‹একসময় জঙ্গলমহলের মানুষের লাইন পড়ে যেত জামিন করানোর জন্য। বেশির ভাগের ছিল মাওবাদী তকমা বাতিলে। কিন্তু এখন তারাই এসে লাইন দিচ্ছেন শুধুমাত্র জেলে ঢোকানোর আবেদন নিয়ে। কিন্তু বেআইনিভাবে কীভাবে জেলে ঢোকাব সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে যাদের জামিন হয়ে গিয়েছে আগেই। কেবলমাত্র সরকারি চাকরি ও প্যাকেজের জন্য লাইন দিচ্ছেন তারা। এনডিটিভি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন