প্রতারক চক্র প্রথমে ফোন করে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক পরিচয় দিয়ে সিভিল সার্জনের কাছে জেলার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. সুজন কুমার সরকারের নাম্বার চাওয়া হয়। সিভিল সার্জন নাম্বারটি তাকে দেন। এরপর ডা. সুজন কুমার সরকারকে ফোন দিয়ে দাফতরিক খোঁজ খবর নিয়ে কথিত অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক ৫০ হাজার টাকা চান। টাকা না দিলে চাকুরীতে সমস্যা হবে বলেও হুমকি ও ভয়ভীতি দেন। বিব্রত-আতংকিত ডা. সুজন বিকাশে দুই ধাপে ৩৩ হাজার টাকা পাঠান। টাকা পেয়ে প্রতারক চক্র ফোন নাম্বারটি বন্ধ করে রাখে। প্রতারনার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ১৭ জুন ডা. সুজন প্রথমে পাইকগাছা থানায় জিডি ও তদন্তের স্বার্থে ৩ আগষ্ট মামলা করেন।
মামলা গ্রহণের পর জেলার এসপি মোহাম্মদ মাহবুব হাসানের তৈরি বিশেষ কৌশলী ছকে তদন্ত শুরু করেন পাইকগাছা থানার ওসি এজাজ শফী। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা ও সোর্স নিয়োগ করে তিনি প্রতারক চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হন। এরপর পাইকগাছা থানার এসআই সুকান্ত কর্মকার, এসআই তাকবীর হোসেন ও এএসআই নাজমুল ইসলাম অভিযানে নামেন। ৬ আগষ্ট দুপুরে লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ থানার কাকিলা নামক স্থান থেকে অতিরিক্ত সচিব পরিচয় প্রদানকারী আ জ ম সামসুদ্দিন মাসুদকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়। সে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জীবন নগর গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে।
পাইকগাছা থানার ওসি এজাজ শফী জানান, গ্রেফতারকৃত মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার সাথে জড়িত রয়েছে। তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। রোববার রাতে তাকে থানায় আনা হয়। আজ সোমবার আদালতে তোলা হবে। তার বিকাশ নাম্বারে বড় বড় অংকের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের নামে এ ধরণের প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় রয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি থাকাবস্থায় লালমনিরহাট জেলা থেকে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছিলেন। তারা সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে বিকাশে টাকা আদায়ে জড়িত ছিল।
খুলনার এসপি মো. মাহবুব হাসান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে মোবাইল ও বিভিন্ন এপস ব্যাবহারে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। নিজেরা একটু সচেতন হলেই অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন