কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে অচলাবস্থা ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কছিয়ার বিলের উপর নির্মিত ডুবুরির সেতু। স্লাবের দু’দিকে এমনকি মাঝখানেও ভাঙা। দেবে গেছে অনেকাংশ। দু’দিকে কাঠ ও বাঁশের চাটাই বিছানো। সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভয়ঙ্কর এ সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে ভিতরবন্দ ও কালীগঞ্জ ইউনিয়নের,নন্দনপুর, বামানেরভিটা, কছিয়ারপাড়, গোরডারাপার, মন্নেয়ারপার, টারিয়াপাড়াসহ ৮ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। দ্রুত সংস্কার না করলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের নন্দনপুর এলাকার কছিয়ার বিলের উপর নির্মিত ডুবুরির সেতুটি একেবারেই নাজেহাল অবস্থায় রয়েছে। এরপরও প্রতিদিন শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের যাতায়াত এ সেতুর উপর দিয়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজের তাগিদেই বাধ্য হয়ে এ পথে যাতায়াত করতে হয় তাদের। রিকশা, ঠেলাগাড়ি, এমনকি মোটরবাইক ও বাইসাইকেল যাতায়াতেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এটি। হাট-বাজারে কৃষিপণ্য আনা নেয়াসহ সকল প্রকার কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় গোলাপ উদ্দিন মিয়া জানান, চেয়ারম্যান-এমপিসহ সরকারি অনেক কর্তাদের অফিসে ঘুরেও সেতুটি সংস্কারে কারো সহায়তা পাননি। তিনি আরও জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বহু লোকের কাছে দেন দরবারের পাশাপাশি সভা-সেমিনার ও মানববন্ধনও করা হয়েছে। কিন্তু কেউ বিষয়টি আমলে নেয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ নির্বাচনের সময় এলে শুধু ভোট চাইতে আসেন বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। দিয়ে যান সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু ভোট পেরুলেই আর কখনোই দেখা মেলে না তাদের।
সরেজমিনে থাকতেই ডাক্তারে কাছে যাচ্ছিলেন রাধা রানী নামের এক নারী। তিনি জানান, জরুরি কোনো প্রয়োজন বা কেউ অসুস্থ হলে এ রাস্তা দিয়ে ওই রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে যাওয়া যায় না। গুরুতর অবস্থায় নিয়ে যেতে যেতেই রোগী মারা যায়। এর আগে তার স্বামী এ পথে মোটরবাইক নিয়ে পারাপারের সময় চরম দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলেও জানান।
পথচারী আইসক্রিম বিক্রেতা জহুরুল হক জানান, প্রতিনিয়ত এ পথে আইসক্রিমের বাক্স বাইসাইকেলের পেছনে বেঁধে গ্রামে গ্রামে আইসক্রিম বিক্রি করতে বের হন তিনি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে বাড়ি ফেরা দায় হয়ে পরে তার। স্থানীয় কৃষক, সুবল চন্দ্র সরকার, রাধাপদ সরকার, শাহজাহান আলীসহ আরও অনেকে জানায় এ সেতুটি না থাকায় এ পথে কৃষিপণ্য নিয়ে চরম বিপাকে পরেন তারা। সঠিক মূল্য থেকেও বঞ্চিত হতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজিব বলেন, আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়ে এখানে নতুন যোগদান করেছি। তাই আমি ওই সেতু সম্পর্কে জানি না এবং এটি করার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সে ব্যাপারেও আমার জানা নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন