স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সচিবের দফতরে মারপিটের ঘটনায় আরও ২১ কর্মচারীকে তলব করেছে তদন্ত কমিটি। আজ রোববার বিকেল ৪টায় নগর ভবনে তাদের হাজির হতে বলা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হকের নির্দেশে ইতোমধ্যে শ্রমিক লীগ নেতাসহ ৭ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ডিএনসিসি সচিবের দফতরের একাধিক কর্মকর্তা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র মতে, তদন্ত কমিটি ভবনের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজ থেকে ২১ জনকে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ১৭ জন সড়ক শ্রমিক এবং সচিবের দফতরের ৪ কর্মচারী রয়েছেন। এদের সবাইকে ২ অক্টোবর অর্থাৎ আজ রোববার বিকালে নগর ভবনে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টম্বর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধিসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার দাবিতে সড়ক শ্রমিকরা সচিবে কার্যালয় ঘেরাও করে। এক পর্যায়ে তারা তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় শ্রমিকরা সচিবকে অপমান করে।
ঘটনা তদন্তে ডিএনসিসি মেয়র দুইজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির কর্মকর্তারা হলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান ও মোবাশ্বের রহমান, যান্ত্রিক বিভাগের তত্বাবধায়ক ক্যাপটেন আজাদ, সহাকারী সচিব মোহাম্মদ ইমান আলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুর রহমান। পরে তদন্ত কমিটি তাদের সুবিধার্থে আরও ১০ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটির পাঠানো তলবি নোটিশে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সচিবের দফতর এবং নগর ভবনে কেন তারা এসেছিল। তাদেরকে কারা আসতে উৎসাহিত করেছিল। ওইদিন সড়ক শ্রমিক হিসেবে তাদের ডিউটি কোথায় ছিল। নগর ভবনে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুমতি ছিল কিনা। যদি অনুমতি থাকে তাহলে তার প্রমাণ নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি উস্কানিদাতাদের ধরার জন্য প্রত্যেকের মোবাইল নম্বরের কললিস্ট সংগ্রহ করেছে বলে জানা যায়। তাছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় ডিএনসিসি সচিব নবিরুল ইসলাম বুলবুল এবং তার দফতরের আঘাতপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। এরপরই ৭ শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সূত্র মতে, তদন্ত কমিটির তলবি নোটিশপ্রাপ্ত ২১ জনের মধ্যে ১৭ জন সড়ক শ্রমিক হলেন অঞ্চল-১ এর (উত্তরা) সালাম, কিতাব আলী, নুর আহমেদ, অঞ্চল-২ এর (মিরপুর) হালিম, আসাদ আলী, রফিক, বাবুল, অঞ্চল-৩ এর (গুলশান) মোহাম্মদ বাইজিদ, মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন, অঞ্চল-৪ এর (মিরপুর) আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ তাহের, মোহাম্মদ শাহ আলম, অঞ্চল-৫ এর (কাওরান বাজার) রানা মিয়া ও মোহাম্মদ মোকলেছ।
নোটিশ প্রাপ্তদের মধ্যে এমন চারজন রয়েছেন যারা নিজেরা বৈধ শ্রমিক নন, বরং অন্যের পরিবর্তে কাজ করেন। এর মধ্যে কাদের নামের একজনের চাকরি হলেও কাজ করেন কালাম নামের অন্য একজন। আরেকজন মনির, যিনি তার বাবার গার্ডের চাকরির বদলি হিসেবে সড়ক শ্রমিকের কাজ করেন।
এ ছাড়া হেলাল নামের একজনের নাম তালিকাভুক্ত হলেও কাজ করেন লিটন নামের অন্য একজন। অন্যদিকে, আওলাদ হোসেন নামের একব্যক্তির স্থলে কাজ করেন আবদুল আজিজ। এই চারজনও ওইদিনের ঘটনার সময় নগর ভবনে ছিলেন।
অপরদিকে, ওইদিনের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সচিবের দফতরের ৪ জনকে তলব করা হয়েছে। এরা হলেন কর্মচারী আবদুল মালেক, সচিবের দফতরের অফিস সহকারী রিয়াজ উদ্দিন, কম্পিউটার অপারেটর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামন এবং সচিবের পিএস সিরাজুল ইসলাম খান। তাদেরকেও উল্লিখিত তারিখে হাজির থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে ডিএনসিসির শ্রমিক লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন