ফেরিতে উঠতে গিয়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পন্টুনের র্যাম থেকে পদ্মায় নদীতে পড়ে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন মোছা. রোকসানা ইয়াসমিন নামে এক নারী ও তার শিশুসন্তান। তাৎক্ষণিকভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মনির হোসেন নামে ফেরির অস্থায়ী এক স্টাফ নারী ও শিশুটিকে উদ্ধার করেন। গতকাল সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকৃত রোকসানা ইয়াসমিন মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার কুশা ইসাপুর গ্রামের হাসানুজ্জামানের স্ত্রী। তাদের শিশুসন্তানের নাম মেহেরাব হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই নারী গতকাল সকাল ৯টার দিকে স্বামীর সাথে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশে আমানত শাহ ফেরিতে উঠছিলেন। তার স্বামী দ্রæত ফেরিতে উঠে গেলেও তিনি একটু পেছনে পড়ে যান। এসময় ফেরি থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাস নামছিল। বাসটি নামার সময় তাদেরকে চাপ দিলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পেরে পন্টুনের র্যাম থেকে কোলের শিশুকে নিয়ে পদ্মায় পড়ে যান।
পদ্মার তীব্র স্রোত তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় সেখানে কর্মরত ফেরির স্টাফ মনির হোসেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করতে লাফিয়ে পড়েন। তিনি তাদেরকে ধরে শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারলেও ওই নারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিলেন না। বিষয়টি দেখে তার স্বামীও ফেরি থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
ফেরির অস্থায়ী স্টাফ মনির হোসেন বলেন, আমি পন্টুনে ফেরির টিকিট পরীক্ষা করছিলাম। এসময় হঠাৎ ওই গৃহবধূ ও শিশুটি নদীতে পড়ে যায়। তা দেখে তাদের উদ্ধার করতে আমিও নদীতে ঝাঁপ দেই। এসময় নারী ও শিশুটিকে সহজেই ধরতে পারলেও তীব্র স্রোতের কারণে ওই নারীটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিলাম না। পরে তার স্বামী নদীতে ঝাঁপ দিলে দু’জনে মিলে আল্লাহর রহমতে তাদেরকে উদ্ধার করি।
ওই নারীর স্বামী হাসানুজ্জামান বলেন, আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। করোনার কারণে মাস দেড়েক আগে স্ত্রী ও সন্তানকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুরে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যাই। লকডাউন শিথিল করায় তাদেরকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। এসময়ই এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। বর্তমানে স্ত্রী-সন্তান দু’জনেই ভালো ও সুস্থ আছে। তাদেরকে নিয়ে আপাতত শ্বশুর বাড়িতেই ফিরে যাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন