শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মুহাররম মাসে নেক আমল করা

এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

এই পৃথিবীতে মানুষ যে সকল কাজ করে থাকে, এগুলোকে দুইভাবে ভাগ করা যায়। প্রথমত: করণীয় কাজ, দ্বিতীয়ত: বর্জনীয় কাজ। এই উভয়বিধ কাজের কোন প্রকার কাজ মানুষের করা উচিত এবং কোন প্রকার কাজে মানুষের পারলৌকিক মুক্তি ও সফলতা দেখা দেবে, তা অনুধাবন করা প্রতিটি বিবেকবান লোকেরই কর্তব্য।
স্মরণ রাখা দরকার যে, করণীয় কাজ বলতে নেককাজ বা সৎকাজ বুঝায়, যা আল কোরআন ও আল হাদীস কর্তৃক অনুমোদিত এবং জ্ঞান-মনীষী ও বিবেকসম্মত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহপাক এরশাদ করেছেন : অবশ্যই যারা ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে, তাদের জন্য এমন সব জান্নাত রয়েছে যার নিম্নদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। (সুরা বুরুজ : আয়াত-১১)।

এই আয়াতে কারিমায় করুণাময় আল্লাহপাক নেক আমলকারীদের জন্য পরম সুখময় জান্নাতের খোশ খবরি প্রদান করেছেন, তবে এই নেক আমলের জন্য ঈমান থাকা শর্ত। ঈমান না থাকলে কোনো নেক আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। এ জন্যই দয়াময় আল্লাহপাক ঈমানের কথা সর্বপ্রথম উল্লেখ করেছেন এবং তার পরে নেক আমল ও উহার শুভফলের কথা তুলে ধরেছেন।

বস্তত : ঈমানের পাঁচটি স্তর বা ঘাঁটি রয়েছে। প্রথমত: একীন বা সুদৃঢ় আস্থা থাকা। এজন্য প্রতিটি নেক আমল পূর্ণ আন্তরিকতা ও ইসলামের সঙ্গে সমাধা করতে হবে। দ্বিতীয়ত: সৎ আমলকে সম্পাদন করার ক্ষেত্রে সততা অবলম্বন করা। তৃতীয়ত: আল্লাহর ফরজ নির্দেশাবলি যা একান্ত অপরিহার্য তা পালন করা। চতুর্থত: যাবতীয় সুন্নাত পালন করা। চাই সুন্নাতে মোয়াক্কাদাহই হোক বা সুন্নাতে গায়রে মোয়াক্কাদাহই হোক, সকল প্রকার সুন্নাতের প্রতি নিষ্ঠার সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে। এই সকল সুন্নাতের প্রতি কোনো প্রকার অবহেলা প্রদর্শন করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, এক একটি সুন্নাত হাজার হাজার নফল ও মোস্তাহাব হতে উত্তম। পঞ্চমত: মুস্তাহাব বা নফল কাজগুলোর প্রতি আদব সহকারে সতর্ক খেয়াল রাখা। সীমিত মানব জীবনে সামান্য একটা নফল আমল করাও অসীম মূল্যবান। আর এই নেক আমলের দ্বারাই পরকালে পদমর্যাদার অধিকারী হওয়া যাবে। তবে, মানুষ যতদিন পর্যন্ত আদব সহকারে নিষ্ঠার সাথে নেক আমল করতে থাকে, ততদিন পর্যন্ত বিতাড়িত শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিতে পারে না এবং তার দিকে অগ্রসর হতে ভয় পায়। অন্যথায় শয়তান বান্দাহর ফরজ কাজগুলোতে নানা রকম বিভ্রান্তি ও গোলমাল সৃষ্টি করে দেয়। তারপর শয়তান আরো অগ্রসর হয়ে তার এখলাস ও একীনের দরজায় গোলযোগ সৃষ্টি করে তাকে হয়রান-পেরেশান করতে থাকে। ফলে, বান্দাহ আমলের ক্ষেত্রে নানা রকম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় এবং ইবাদতের মধ্যে একাগ্রতা ও উহার স্বাদ লাভ করতে পারে না। এ পর্যায়ে স্মর্তব্য যে, নেক আমলগুলোর মধ্যে অনেকগুলো কাজ বা অনুষ্ঠান গোপনে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মূল আমলকারী ছাড়া এ সকল বিষয়াবলি সম্পর্কে বাইরের কেউ জানতে বা বুঝতে পারে না। যেমন আল্লাহপাকের কুদরতি বিষয়গুলোর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখা এবং যে সকল কাজ আল্লাহর মহত্তে¡র বিপরীত সে বিষয়াবলি সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা। এই শ্রেণির নেক আমলগুলোর মধ্যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে আল্লাহর জিকির করাও শামিল রয়েছে। সুতরাং মুহাররম মাসে সকল প্রকার নেক আমল অধিক হারে আদায় করাই শ্রেয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন