শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বিধিনিষেধ শিথিলতায় সরকার কিছুটা তাড়াহুড়ো করছে, মন্তব্য জাতীয় পরামর্শক কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:১১ পিএম | আপডেট : ৩:৫১ পিএম, ১৪ আগস্ট, ২০২১

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি মন্তব্য করেছে, কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা তাড়াহুড়ো করছে বলে মনে করে কমিটি।

কমিটির সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ'র সভাপতিত্বে ৪৪তম অনলাইন বৈঠকে এ মন্তব্য করা হয় বলে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বৈঠক কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে কিছু সুপারিশ করা হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে সারাদেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ পরিস্থিতি ও এর নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ২৩ জুলাই থেকে ১০ আগস্টের লকডাউন কঠোরভাবে পালিত না হলেও জনসমাবেশ হওয়ার মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান বন্ধ থাকায় সংক্রমণ হারে উন্নতি দেখা যায়নি। তবে, সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কোনোটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আসেনি।

সাম্প্রতিককালে সরকারের দ্রুত বিধিনিষেধ শিথিল করার/তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিটি। জীবিকা ও দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল রাখায় সরকারের দায়িত্ব উপলব্ধি করে ও সরকারের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

তবে, বিধিনিষেধ শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা তাড়াহুড়ো করছে বলে মনে করে কমিটি। কারণ, এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়তে পারে, তাতে অর্থনীতি আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।

লকডাউন আরও ১-২ সপ্তাহ চলমান রাখতে পারলে এর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যেত। এ অবস্থায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সরকারের নেওয়া সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করে।

কমিটি সুপারিশ করে- সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি আরও কিছুদিন বন্ধ রাখা। রেস্টুরেন্ট/ক্যাফেটেরিয়াতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা না রেখে কেবলমাত্র বিক্রির অনুমতি দেওয়া। সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণ পরিবহন চলাচল। যেসব ক্ষেত্রে সম্ভব বাড়িতে বসে কাজ করা ও অনলাইন সভা/কর্মশালা/প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখে অফিস খোলা রাখা। শতভাগ সঠিকভাবে তিন লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক পরার নিশ্চয়তা। অথবা পুনরায় বন্ধ করার বিধান রেখে অফিস, আদালত, ব্যাংক, দোকানপাট, বাজার খোলা।

তবে, সব ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেয় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠকে সরকারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এক সপ্তাহে ৫০ লক্ষাধিক মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানানো হয়। অন্তঃসত্ত্বা ও দুগ্ধদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় কমিটি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ আগামী ২১ আগস্ট বা কাছাকাছি যে কোনো তারিখ থেকে এমবিবিএস/বিডিএস কোর্সের ২য় বর্ষ ও পঞ্চম বর্ষ/শেষ বর্ষের ক্লাস চালুর বিষয়ে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে কমিটির সব সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনা করেন। ইতোমধ্যে এসব শিক্ষার্থীদের দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সাপেক্ষে প্রাথমিকভাবে এই দুই বর্ষের ক্লাস শুরু করার পক্ষে কমিটি মত দেন।

 

তবে, কমিটি জানিয়েছে- ক্লাস শুরুর আগে সকল শিক্ষার্থীর সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ওপর প্রশিক্ষণ করাতে হবে। শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সংক্রমণের উপর নজরদারি রাখতে হবে। সংক্রমিত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা/আইসোলেশন এবং তাদের সংস্পর্শে আসা শিক্ষার্থীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা করতে হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন