স্বাধীনতার মহান স্থাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ দুপুর দেড়টায় বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব কে এম রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সম্মানীত সচিব জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান।
হাফেজ মাওলানা ক্বারী মোঃ হাফিজুল ইসলামের তিলাওয়াত ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান রচিত হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু কবিতাবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক জনাব কে এম রুহুল আমীন ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপস্থাপন ও বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু যেসকল মূল্যবান অবদান রেখে গেছেন তাঁর সুফল আমরা এখনও ভোগ করছি। ১৯৭৩ সালে ৩১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা আলীয়ার মাঠে সমবেত তৎকালীন মাদরাসা শিক্ষক ও ইসলামি শিক্ষা সংস্কার কমিটির সম্মেলনে বলেছিলেন মসজিদ মক্তব হলো শিক্ষার মূল। তিনি বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশে মাদারাসা শিক্ষা উন্নয়নে নীতি নির্ধারনী নির্দেশনা দিয়ে মাদরাসা শিক্ষার অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করেছিলেন। ইসলামি ধর্মিয় শিক্ষা তথা মাদরাসা শিক্ষাকে বেগবান করার লক্ষ্যে তিনি যে অগ্রণী ভূমিকা রেখে গেছেন তা বর্ননা করে শেষ করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযুগি করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজগুলো তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমেই সমাপ্ত হবে ইনশাআল্লাহ। আয়োজিত এ দোয়া মাহফিল থেকে মহাপরিচালক জনাব কে এম রুহুল আমীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ জয়’সহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকলকে স্বাগত জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সম্মানীত সচিব জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মাদরাসা শিক্ষার বিভিন্ন উন্নয়নের দিক তুলে ধরে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত মাদরাসা শিক্ষানুরাগী একজন মানুষ। মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়ন, ডিজিটালাইজেশন, যুগপোযুগি ও আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নানাবিধ প্রকল্প, ভাষা কোর্স ও ট্রেনিং চালু করা হয়েছে। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সাবলম্বি হতে পারে সেজন্য দেশের সকল মাদরাসার সাথে সংযুক্ত কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানসম্মত পাঠাগার, শিক্ষার্থীদের উন্নত কমনরুম স্থাপনের প্রকল্পও চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার পরিজনের মধ্যে যারা শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের যারা জিবিত রয়েছেন সকলের সুস্বাস্থ্য ও দির্ঘায়ু কামনা করে দুয়া করা হয়। একই সাথে চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রদুর্ভাব থেকে দেশ ও জাতিকে হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে সাহায্য প্রর্থনা করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন, মহাখালী দারুল উলুম হোসাইনিয়া কামির মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম আল-মারুফের।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এ দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (মাদরাসা), কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনাব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, জাতীয় কমিশনার, বাংলাদেশ গার্ল গাইডস এসোসিয়েশন। এছাড়াও দেশের ৭২টি মাদরাসার প্রধানগণ দোয়া মাহফিলে অংশনিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন