শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

মরা পদ্মায় বান ডেকেছে, হাজারো মানুষ ভীড় করছে নদী তীরে

রেজাউল করিম রাজু | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৩:১০ পিএম | আপডেট : ৩:১১ পিএম, ১৭ আগস্ট, ২০২১

মরা পদ্মায় বান ডেকেছে। বিস্তীর্ন বালুচরের স্থলে এখন ঘোলা পানির ¯্রােত। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে প্রতিদিন একটু একটু করে পানি বাড়ছে। যদিও বিপদ সীমার খানিকটা নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফারাক্কার গেট পেরিয়ে হু হু করে পানি আসছে। প্রথমেই আঘাত হানছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের দু’পাড়েই ভাঙ্গন শুরু করেছে। ইেিতামধ্যেই চরজগন্নাথপুর বাদশাপাড়া, পন্ডিতপাড়া, মনোহরপুর বেশী হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যেই বিপুল পরিমান জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল শরীফ জানান, পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরীভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পদ্মা আঘাত হেনেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ি, চারঘাট ও বাঘা এলাকায়। বাঘার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পনেরটি চরের তিনহাজার পরিবার এখন পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। জমির ফসল ডুবেছে। আতংকে রয়েছেন পদ্মা পাড়ের মানুষ।
উজানে (ভারত) বর্ষন হওয়ায় সেই পানি গঙ্গা হয়ে পদ্মায় নামছে। ওপারের পানির চাপ কমাতে উদার হস্তে খুলে দিয়েছে ফারাক্কার গেট। নাব্যতা হারানো পদ্মায় এক সাথে ছুটে আসা পানিতে এমনিতে ফুসে উঠছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, প্রতিদিন গড়ে ১৫/২০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। গতকাল গতকাল সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৫৫ মিটার। রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। বিপদ সীমার প্রায় ৯৫ সে:মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমনটি জানান গেজরিডার। নদীর পানির গতি বিধি পর্যবেক্ষনকারী কর্মকর্তার মতে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বিলম্বিত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকবেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধি নিয়ে এখন পর্যন্ত ভয়ের কোন কারন নেই। রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর শহর রক্ষা বাধের উচ্চতা ১৯ দশমিক ৬৭ মিটার। তবে নদীর পানি বৃদ্দিতে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে শংকা রয়ে গেছে।
গতকাল বিকেলে পদ্মার তীর ঘুরে দেখা যায় লকডাউনে আটক থেকে মুক্তি পাওয়া। হাজারো মানুষ
ভরা পদ্মার রুপ দেখতে তীরজুড়ে ভীড় করছে। দলবেধে নৌকায় ভাসছেন। সেলফিও তুলছেন। নৌকাগুলো সাধারনত তীর ঘেষে এ প্রান্ত থেকেও প্রান্ত পর্যন্ত যাতায়াত করছে। সতর্ককতা হিসাবে বাধ্যতামূলক লাইফ জ্যাকেট ব্যব্হারও বেড়েছে। নবগঠিত নৌপুলিশও সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। অনেকে আবার সাহস করে নৌকা নিয়ে মাঝ নদীতে যাচ্ছেন। বাচ্চু মাঝির নৌকায় যাত্রীরা জানালেন মাঝ নদীতে গেলে মনে হয় যেন সমুদ্রে এসেছি। চারিদিকে অথৈ পানি। এ এক অন্যরকম রোমাঞ্চ। আবার ভয় ভয়ও লাগে। নদী তীরে আসা মানুষ বলছেন যদি সব সময় এমন ভরা পদ্মা থাকতো তবে কতই না মজা হতো। এখন একটু সুবিধা হয়েছে। নদীর দক্ষিন পাড়ে চরাঞ্চলের মানুষের। তারা সহজেই এপার ওপার যাতায়াত করছেন। পানি কমে গেলে ঘুর পথে যাতায়াত। অনেকে ভরা পদ্মার তীরে দাড়িয়ে নির্মল বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছেন।
নদী তীরে মানুষের সমাগম বেড়ে যাওয়ায় ফুচকা চটপটি বাদাম আমড়া পেয়ারা মাখাসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের বেচা বিক্রি বেড়ে গেছে। তাদের আয় ভাল হচ্ছে বলে জানান। বিক্রেতাদের কথা সারা বছর যদি এমনি থাকতো তাহলে কতনা ভাল হতো। কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেন এমন অবস্থা আর কটাদিন থাকবে। তারপর পানির স্থলে ধু ধু বালিচর। এর মাঝে পদ্মার রুপালী ইলিশের খোঁজে ডিঙ্গী নৌকায় জাল নিয়ে নেমেছে জেলের দল। কিন্তু সেই রুপালী ইলিশের দেখা মেলেনি। এবার অন্য মাছের সংখ্যা কম পাওয়া যাচ্ছে বলে মাছ ধরা জেলেরা জানান। তারপর চিংড়ী বেলে ঘেড়ে পাবদা মাছ যা পাচ্ছেন তা ভাল দামে ক্রেতারা কিনছেন। নদীর এসব টাটকা মাছের স্বাদই অন্যরকম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack Ali ১৭ আগস্ট, ২০২১, ৫:০৮ পিএম says : 0
আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ চলে .... ইন্ডিয়া কোনদিন সাহস হতো না আমাদের 59 একটা নদীতে বাঁধ দেওয়া দেশ চলে ......র দ্বারা .............................
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন