কাল (১৯ আগস্ট) বৃহস্পতিবার খুলছে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। সীমিত পরিসরে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার ঘোষণায় আশা জেগেছে কুয়াকাটার ব্যাসায়ীদের মাঝে। সাগরকন্যা কুয়াকাটার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। কিন্তু করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ১ এপ্রিল থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের সমাগম নিষিদ্ধ করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। টানা ১৩৯ দিন বন্ধের পর খুলছে হোটেল-মোটেলগুলো।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। শীতের কুয়াকাটা শান্ত থাকলেও বর্ষায় থাকে উত্তাল। পর্যটকদের কাছে এর আলাদা আবেদন রয়েছে। তাই কুয়াকাটা সারা বছরই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণে মুখরিত থাকে।
এদিকে সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হবে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। তাই এখন পর্যটন ব্যবসায়ীরা সবাই পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে। কুয়াকাটার সৈকতের চেয়ার-ছাতা ভাড়া দেওয়া ব্যক্তি, ফটোগ্রাফাররা, হোটেলমালিকেরাও আবার নতুন উদ্যোগে প্রস্তুত।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুয়াকাটার মিস্ত্রিপাড়ায় রাখাইন নারীরা তাঁদের হস্তচালিত তাঁত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন। তাঁদের হাতে তৈরি তাঁতপণ্য বিক্রির জন্য মার্কেটে তাঁদের দোকানগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। সৈকতে চেয়ার-ছাতা বসানোর কাজ করছেন ব্যবসায়ীরা। আর সৈকতের ফটোগ্রাফাররা আবার হলুদ পোশাক পরে ক্যামেরা কাঁধে ঝুলিয়ে সৈকতের আশপাশে ঘুরছেন।
সৈকতের ফটোগ্রাফার সমিতির সভাপতি মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, পর্যটকদের আগমনই তাঁদের বেঁচে থাকার সম্বল। পর্যটক না আসায় এ কয়েক মাস মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে তাঁদের। সৈকতে ফটোগ্রাফির সঙ্গে তিন শতাধিক মানুষ জড়িত। পর্যটকেরা আসবেন, তাই তাঁরা আবার নতুন করে আশার আলো দেখছেন।
কুয়াকাটার ব্যবসায়ী মো.জহিরুল ইসলামের জিরো পয়েন্টে একটি ঝিনুকের দোকান রয়েছে। তিনি তাঁর দোকানটি পরিষ্কার করার ফাঁকে জানান, করোনায় তাঁদের এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। এখন দোকান পরিষ্কার করে নতুন করে সাজাব।
কুয়াকাটার রেস্তোরা ‘খাবার ঘর’-এর মালিক মো. সেলিম জানান, তাঁর রেস্তোরাঁয় দৈনিক ২০-২৫ হাজার টাকার বেচাকেনা হতো। হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মচারীদের ছুটি দিয়েছিলেন। কর্মচারীরা করোনাকালে অন্য কাজে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটার সৌন্দর্যই পর্যটকদের কুয়াকাটায় টেনে নিয়ে আসে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, কুয়াকাটায় ১৬০টির মতো আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। করোনার কারণে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় প্রতিটি হোটেলের মালিকই বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও বিনোদনকেন্দ্র আসনসংখ্যার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করে চালু করতে হবে। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যারা এ নিয়ম মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন