বরিশাল-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটে জনদুর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বাইরে। অথচ এ ফেরির ওপরই কুয়াকাটা ও পটুয়াখালীর সাথে বরিশাল বিভাগীয় সদরসহ সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল। প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার যানবাহন পারাপার হলেও পায়রা নদীর দুই প্রান্তের ঘাটের সংযোগ সড়ক বিগত বছরের মত এবারো বর্ষা মৌসুমে ভরা জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। প্রতিদিন দু’দফার মূল জোয়োরের সময় অন্তত ৩ ঘণ্টা করে ফেরির সংযোগ সড়কসহ এর গ্যাংওয়ে ২-৩ ফুট পানির তলায় ডুবে থাকেছ। যাত্রীরা উভয় প্রান্তেই প্রায় দেড়শ’ মিটার হাটু সমান কাঁদা পানি পেরিয়ে ফেরিতে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন।
১৯৭৮ সালে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক চালুর সাথে লেবুখালীতে পায়রা নদী তীরে দীর্ঘ বেলি সেতুসহ সংযোগ সড়ক ও ঘাট নির্মাণ করে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। সে থেকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফেরির সাহায্যে এ ঘাটে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। পরবর্তীতে এ মহাসড়ক ও ফেরি হয়ে বরগুনা ও কুয়াকাটার সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। ক্রমান্বয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এখানে ইউটিলিটি টাইপ-১ (উন্নত) ফেরিও মোতায়েন করে। বর্তমানে এ ঘাটে ৬টি বিভিন্ন মডেলের ইউটিলিটি ফেরি থাকলেও দুটি স্থায়ীভাবে অচল হয়ে বন্ধ। অপর ৪টির মধ্যে পর্যায়ক্রমে ২টি ফেরিও চলছে না। ফলে প্রতিদিনই সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পারাপারের অপেক্ষায় থাকে।
তবে এর চেয়েও ভয়াবহ বিড়ম্বনা তৈরি করছে লেবুখালী ফেরি ঘাটের গ্যাংওয়েসহ দু’প্রান্তের সংযোগ সড়ক জোয়ারে প্লাবিত হবার কারণে। প্রতিদিন দু’বার অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত জোয়ারের পানি ঠেলে শত শত যানবাহন ফেরিতে ওঠানামা করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কোমর সমান পানি ডিঙিয়ে ফেরি ঘাটে ওঠানামা করতে গিয়ে যাত্রীদের অনেকেই বিপাকে পড়ছেন। বিশেষ করে মোটর বাইক যাত্রীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ঘাটের ইজারাদার বলেন, এ ঘাটে ৬টি ফেরির ২টি দীর্ঘদিন ধরে বিকল। পটুয়াখালী ফেরি বিভাগ বিষয়টি নিয়ে উদাসীন। ঘাটের গ্যাংওয়েসহ সংযোগ সড়কটি ভরা জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে। বরিশাল ও পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ এসব ব্যাপারে কোন নজর দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, সঙ্কট নিরসনে নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন