রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দেশে ৬ লাখ মানুষের প্রশমন সেবা দরকার গুরুত্ব বাড়লেও অধিকাংশই সেবার বাইরে

প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ওষুধের সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত, দক্ষ জনবল সৃষ্টি ও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলেই দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের (প্রশমন সেবা) বিস্তার ঘটনো সম্ভব। বর্তমানে দেশে ছয় লাখ মানুষের প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন। যাদের অধিকাংশই এই সেবা থেকে বঞ্চিত।  
গতকাল বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)- মিলনায়তনে আসন্ন বিশ্ব হসপিস্ ও প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। আগামী ৮ অক্টোবর বিএমএ’র উদ্যোগে এই দিবস দেশে প্রথম বারের মতো পালন করা হবে। এর প্রতিপাদ্য ‘ব্যথাপূর্ণ জীবন এবং ব্যথাসহ মৃত্যু : কোনোটিই কাম্য নয়’।
বিএমএ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান ও সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন- বিএমএ’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মাহমুদ হাসান, মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিটের প্রধান প্রফেসর ডা. নিজামুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
প্রফেসর ডা. মাহমুদ হাসান বলেন, আরোগ্য অযোগ্য রোগের সম্মুখীন মৃত্যু পথযাত্রী মানুষের কষ্ট-যন্ত্রণা কমানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রক্রিয়াকেই প্যালিয়েটিভ কেয়ার বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার বেশ ভালোভাবে চলছে এবং জনপ্রিয় হয়েছে। চিকিৎসা ও সমাজবিজ্ঞানে এটি স্বীকৃত।
প্রফেসর ডা. নিজামুদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার ও অন্যান্য অসংক্রামক ব্যাধি, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বর্তমানে বিএসএমএমইউতে প্যালিয়েটিভ মেডিসিনের উপর ৫ বছর মেয়াদি এমডি কোর্স চালু আছে। এটা বেশিদিন হয়নি। এতে পড়াশোনা করছেন- তিনজন। তবে প্রশিক্ষণের ভাল ব্যবস্থা রয়েছে।
প্যালিয়েটিভ চিকিৎসক-নার্স তথা দক্ষ-জনবলের অভাব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএসএমএমইউর প্যালিয়েটিভ সেন্টারে পাঁচজনের মতো চিকিৎসক আছেন। নার্স বরাদ্দ ছিল ১৫ জন। এরপর থাকল ১২জন। তিনজন চলে যাবে সরকারি চাকুরিতে। এখন প্রশিক্ষিত নার্স আছেন নয়জন। নিজামুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্যালিয়েটিভ কেয়ারে ব্যবহার করা হয় মরফিন জাতীয় ওষুধ। এটা আমাদের দেশে ব্যবহারে সরকারি বিধি-নিষেধ আছে। সব জায়গায় পাওয়া যায় না। এরকম হলে প্যালিয়েটিভ কেয়ার নিশ্চিত করা দুষ্কর। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রণীত আইন সংশোধন করতে হবে, ওষুধ কোম্পানিগুলোকে একই জাতীয় দামি ওষুধের পরিবর্তে কম দামে মরফিন প্রস্তুতে উৎসাহিত করা উচিৎ। প্রয়োজনে সরকারের এসেনসিয়েল ড্রাগস কোম্পানির মাধ্যমে মরফিন উৎপাদন ও বিতরণ নিশ্চিত করা যেতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিট ছোট পরিসরে চালুসহ দেশে বিভিন্ন সংগঠন প্যালিয়েটিভ সেবা ক্ষুদ্র পরিসরে প্রদান করছে। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের বিষয়টি উল্লেখের উপর গুরুত্ব দেন তিনি।
বিএমএ’র মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, প্রতিরোধ ও আরোগ্যই শেষ নয়। আরোগ্য না করা গেলে কী রোগী কষ্ট পাবে? মোটেও না। এমনটা চিকিৎসা বিজ্ঞান সমর্থন করে না বলেই প্যালিয়েটিভ কেয়ারের উদ্ভাবন। মরফিনের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে অবশ্যই। কিন্তু এটা যেন রোগীদের জন্য সহজপ্রাপ্য করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন