সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া পরিবার থেকে চাঁদা আদায় করছে নুর উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তি। সম্প্রতি সরকারি ঘর পাওয়া দিনমজুর নুরুল আফছার সবুজ নামের এক ব্যাক্তির কাছ থেকে টাকা আদায়ের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সরে জমিনে গেলে চরদরবেশ ইউনিয়নের ৮নং স্লুইজ ও আদর্শগ্রাম এলাকার অসংখ্য মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি ঘর, বিধবা ও বয়স্ক ভাতা ইত্যাদির নামে প্রকাশ্য চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেন।
আমাদের সোনাগাজী’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে ৪মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের অডিওটি প্রকাশ পায়।পরে সেটি একাধিক পেজবুক আইডি ও পেজে ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত নুর উদ্দিন চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিন চরদরবেশ গ্রামের জেবল হকের ছেলে। ০৯ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদ বলে দাবী করেছেন।চাঁদাবাজির শিকার দিনমজুর চরছান্দিয়া ইউনিয়নের চার নাম্বার ওয়ার্ডের আইয়ুব আলীর ছেলে।এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে দিনমজুর পরিবার কে হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
টাকার বিনিময়ে ঘর পাওয়ার বিষয়ে দিনমজুর সবুজ বলেন,পরিবার নিয়ে বসবাস করার মতো আমার নিজস্ব কোন জমি ও ঘর নেই।মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য জামশেদ আলমের সহযোগীতায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিই।এর কিছুদিন পর নুর উদ্দিন আমার সাথে যোগাযোগ করে জানায় চারশ জনে ঘর পাওয়ার আবেদন করলেও তিনি ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে আমিসহ ১৩ জনের ঘর পাওয়ার বিষয়টি চুড়ান্ত করেছেন।ঘরের রেজিষ্ট্রির প্রক্রিয়া চলছে তাই টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবেনা বলে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন।আমি তাকে টাকা দিতে পারবোনা বলে অপারগতা প্রকাশ করলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।পরে সে আবারও আমার সাথে যোগাযোগ করে টাকা না দিলে ঘর অন্যদের নামে বরাদ্ধ করা হবে জানালে উপায়হীন হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হয়।পরে স্থানীয় এনজিও থেকে ঋন নিয়ে তাকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করি।টাকা নেওয়ার সময় সে বিষয়টি কাউকে জানালে ঘরের বরাদ্ধ বাতিল করানো হবে বল্লে আমি ভয়ে কাউকে জানায়নি।গত মঙ্গলবার(১৭ আগষ্ট) উপজেলা প্রশাসন আমাকে ঘরের চাবি ও কাগজপত্র বুঝিয়ে দিলে নুর উদ্দিন রাতে আমার কাছে আরও ৫ হাজার টাকা দাবী করে না পেয়ে গালমন্দ করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নুর উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন,দলীয় কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঁদা চাওয়া ও আদায়ের অডিও ভাইরালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কথা বলবেন বলে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সোনাগাজী উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) লিখন বনিক জানান, দক্ষিন চরদরবেশ আদর্শগ্রাম আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাসের জন্য গত মঙ্গলবার ৩৭ জনের নিকট ঘরের চাবি ও কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।এর আগে আরও ৪৭ জনের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে।ঘর পেতে চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি অবগত নয় বলে জানান।
সোনাগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) এ এম জহিরুল হায়াত জানায়,প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পটি আমরা গুরত্ব দিয়ে দেখছি।এখানে কেউ অনিয়ম দুর্নীতি করলে ছাড় দেওয়া হবেনা।ঘর পেতে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন