দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের অবস্থা সংকটাপন্ন। রাজশাহী থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসান আজিজুল হককে শনিবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে তার চিকিৎসা করা হবে।
জানা গেছে, বাথরুমে পড়ে আহত হওয়ার পর প্রায় এক মাস ধরে বিছানায় রয়েছেন হাসান আজিজুল হক। তিনি কাউকে চিনতে পারছেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে এতদিন বাসায়ই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চৌদ্দপায় আবাসিক এলাকা বিহাসে নিজ বাসায় ছিলেন। কোভিড-১৯ এর উর্ধ্বমুখী সংক্রমণের কারণে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি।
কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ছেলে ইমতিয়াজ হাসান জানিয়েছেন, ইলেক্ট্রোলাইট ইম্ব্যালেন্স তার বাবার প্রধান সমস্যা। এছাড়া হার্টের সমস্যা আছে। পড়ে গিয়ে তিনি কোমরেও আঘাত পেয়েছিলেন। সঙ্গে আছে ডায়াবেটিস। এখন তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক। বাসায় অন্তত সাতজন চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এর আগে ইমতিয়াজ হাসান ফেসবুকে লেখেন, আব্বাকে নিয়ে কখনো কিছু লেখা হয়ে ওঠে না। বাকি দুনিয়ার কাছে যে রূপেই পরিচিত হোন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমার জন্য নিরন্তর বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছেন আমার বাবা। মোটের ওপর গল্পকার হিসেবেই সবাই চেনেন হাসান আজিজুল হককে। ২০০৬-এ তার বহুপ্রার্থিত উপন্যাস 'আগুনপাখি' শেষ করে আত্মজীবনীতে হাত দিলেন। ধরে নিয়েছিলাম, আব্বার হাতে আর নতুন কোনো তাস নেই! কিন্তু আশি পেরনোর পরেও কলম থেকে নতুন নতুন কাজ বের করে আমায় অবাক করেছেন। লিখেছেন অনুবাদগ্রন্থ (আর্নেস্টহেমিংওয়েঃ কিলিমানজারোর বরফপুঞ্জ ও অন্যান্য গল্প), ভ্রমণবৃত্তান্ত (লন্ডনের ডায়েরি) আর কবিতার বই (সুগন্ধি সমুদ্র পার হয়ে)। ‘বাপ, তোর সোনার কলম হোক' -মায়ের দোয়া ফলেছে তাঁর জীবনে। মানুষের দোয়াও পেয়েছেন নিশ্চয়।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০৪ সালে অবসরে যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন