চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম ও সাক্ষ্যগ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের এপিবিএন চেক পয়েন্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। গতকাল সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর মধ্য দিয়ে এই বিচারকার্য শুরু হয়। সকাল ১০ টার কিছু সময় পর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এর আগে সকালে মামলার ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশে বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী গুলি করে নির্মমভাবে খুন করে বলে দাবি করেছেন মামলার বাদী মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এ হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বিবরণ জেনে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করেছি। তিনি ১৫ জন আসামির প্রত্যেকের অপরাধ অনুযায়ী বিচারের প্রত্যাশা করেন আদালতের কাছে।
চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্য প্রদানকালে মামলার বাদী ও নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গতকাল সোমবার কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে এ সাক্ষ্য দেন। এ সময় তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তসহ ৯ জন আইনজীবী।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, প্রথমে মামলার বাদী প্রথম সাক্ষী নিহত মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। প্রথম দিন ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা থাকলেও কয়েকজনের ছুটির আবেদনে এবং সময় স্বল্পতার কারণে অন্যান্যদের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার আশা করছি। তিনি আরো বলেন, প্রথম সাক্ষী মামলার বাদী শাহরিয়ার ফেরদৌস এর জেরা চলছে। আজ এটি শেষ হবে বলে আশা করছেন তিন। চলতি বছরের ২৬ জুলাই থেকে পরবর্তী তিন দিন সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারিত থাকলেও করোনা সংক্রমণে রোধে কঠোর বিধিনিষেধ চলায় তা সম্ভব হয়নি। পরে ২৩, ২৪ ও ২৫ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে মেজর অব. সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন চত্তরে মামলার অন্যতম প্রধান আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ আসামিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে। এই মানববন্ধনে শত শত নারী পুরুষ ও শিশুরা অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যার পাঁচদিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন