শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সঙ্কট উত্তরণে চলছে কূটনৈতিক তৎপরতা

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৪ এএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। এতে করে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মী যেতে পারছে না। সৃষ্ট এ সংকট উত্তরণে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গত সোমবার হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট অব কোরিয়ার (এইচ আর ডি কোরিয়া) প্রেসিডেন্ট ও মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিউলে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দ্রুতই বাংলাদেশি কর্মীদের উপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে ওই বৈঠক থেকে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীরা দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে নিজ নিজ কাজে যোগ দিতে পারবেন।
জানা গেছে, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কোরিয়ায় প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি কাজ করছেন। এদের উল্লেখযোগ্য অংশ উচ্চশিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও ভালো বেতনের চাকরি করছেন। এদের মধ্যে যেসব এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) কর্মীরা করোনার আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন, তাদের অনেকেই ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে কোরিয়ায় ফিরে যেতে পারেননি। গত দুই বছর ধরে আটকে পড়া এমন দক্ষ কর্মীর সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি এবং নতুন করে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও প্রায় দুই হাজার ইপিএস কর্মী।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মেক্সিকোতে সদ্য যোগ দেওয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম গত সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা একবার তুলে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষার কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়নি।
সূত্র জানায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দোক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করা বাংলাদেশি কর্মীর মধ্যে ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইপিএস কর্মীদের দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় কূটনৈতিক তৎপরতা। ইপিএস কর্মীদের ওপর দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস অব্যবহাতভাবে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সোমবারের বৈঠক প্রসঙ্গে আবিদা ইসলাম বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও আমাদের বিস্তর আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এসব বৈঠকে আমরা বাংলাদেশের কর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও তাদের কর্মস্থলে যোগদানে সহযোগিতা চেয়েছি এবং তারা আমাদের প্রস্তাব বিবেচনায় রেখেছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব এবং আটকে পড়া কর্মীরা খুব শিগগরিই কোরিয়া ফিরে যেতে পারবেন।
ইপিএস কর্মী ফয়সাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা যারা করোনার শুরুতে তিন মাসের ছুটিতে এসেছি, তাদের ছুটি দেড় বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। মালিক তো আমাদের অপেক্ষায় থাকবে না। যেসব দেশে কোরিয়ার ভিসা নিষেধাজ্ঞা নেই, সেসব দেশ থেকে তারা লোক নিয়ে নিয়েছে। আমাদের কয়েকজনকে মালিক না করে দিয়েছে। এখন আমরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি।
বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন এসব কর্মী। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৩৩ জন কর্মী পাঠিয়েছে বোয়েসেল। করোনার কারণে দেশে এসে আটকে পড়া কর্মীদের ফেরত পাঠাতে এবং তাদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে বেশ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে বোয়েসেল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন