প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি করেছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর মহাসচিব জিএম জাহাঙ্গীর কবির রানা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করে একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রদান করেন।
আজ ২৬ শে আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে তিনি এ ঘোষণা দেন। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এল.এম কামরুজ্জামান এবং লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব জি এম জাহাঙ্গীর কবির রানা। এছাড়া বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ, মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মো. মামুনুর রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান মো. হামিদুল ইসলাম মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব জয়নুল আবেদীন জয়, যুগ্ম মহাসচিব মো. নুরুন নবি, কে.এম তরিকুল ইসলাম ও শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেন, দেশে অবৈতনিক ও সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করে দেশকে নিরক্ষরতামুক্ত করা সরকারের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অতুলনীয় অবদান রেখে চলেছে। পিইসি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের ফলাফল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক ভালো। দেশে বিদেশে প্রাথমিক শিক্ষায় এই শিক্ষাবান্ধব সরকারের যে সাফল্য ও সুনাম রয়েছে, তার প্রায় অর্ধেক অবদানই কিন্ডারগার্টেন সমূহের বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদেরকে উদ্যোক্তা হতে বলেছিলেন। লেখা-পড়া করে বেকার না থেকে স্বউদ্যোগে দেশের কাজে অংশ নিতে বলেছিলেন। আমরা আপনার কথা মতো উদ্যোক্তা হয়েছি। আমরা সমাজের আরও আট লক্ষাধিক বেকার যুবকের বেকারত্ব দূর করেছি। আমরা প্রায় এক কোটি শিশুর লেখা-পড়ার দায়িত্ব নিয়েছি। এই এক কোটি শিশুর লেখা-পড়ার জন্য আপনার হাজার হাজার অবকাঠামোগত ব্যয় প্রয়োজন হতো, এই আট লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারীর বেতন সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া লাগতো, এক কোটি শিশুকে রাজকোষ থেকে উপবৃত্তি দেওয়া লাগতো।
রানা বলেন, আমরা দেশের প্রায় ৪০% শিশুকে শিক্ষাদান করেও আজ অবহেলিত। আজ আমরা বাঁচতে চাই, বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। এই আঠারোটি মাস ধরে আমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছি। মাস পেরুলেই সংসার খরচ, বাড়ী ভাড়া, প্রতিষ্ঠান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল, পাওনাদারের চাপ ইত্যাদি দরজার সামনে এসে কড়া নাড়তে থাকে। দুমুঠো ডাল-ভাত খেয়ে জীবন ধারণ যেখানে অনিশ্চিত, সেখানে এতো এতো চাপ ধারণ করা আমাদের জন্য অসহনীয় হয়ে পড়েছে। এসব চাপ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে আমার সহকর্মী ভাইয়েরা কেউ কেউ আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথও বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। কেউ আবার বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করে দিন-মুজুর, রিক্সাচালক, শ্রমিক, রাজমিস্ত্রির যোগালী, ফুটপাতের ব্যবসায়ী, অথবা হোটেল কর্মচারীর কাজে যোগ দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের জন্য একটি লজ্জাজনক অধ্যায়।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিন, তারা তাদের মতো করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করতে চায়। যেহেতু বাংলাদেশ সরকারের প্রদেয় কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা বা সহযোগীতা তারা পায়নি, এমনকি শিক্ষামন্ত্রী ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তাদের কোনো প্রকার খোঁজ নেন নি, তাই তারা মন্ত্রীদ্বয়কে অযোগ্য বলে অখ্যায়িত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন