বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শেরপুরে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ৮:৪৭ এএম

এক সময় গরু আর মহিষ দিয়েই হাল চাষ করা হতো। এছাড়া কোন উপায়ও ছিলোনা হাল চাষ করার মতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে চাষাবাদেরও এসেছে পরিবর্তন। এখন পশু দিয়ে চাষাবাদ না করে যান্ত্রিক নানা প্রযুক্তির সাহায্যে চাষাবাদ করে থাকে কৃষকরা। কিন্তু ভিন্ন চিত্র দেখা মিললো শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের গোল্লারপাড় ও বালুঘাটা গ্রামে। সেখানে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ করার এক ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা এখনো চালু রয়েছে।

ঘোরা শখের বশে লালন পালন করে তাতে শোয়ার হয়ে মানুষ যায় এদিক-সেদিক। আবার ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতার জনপ্রিয়তাও অনেক। সৌখিন মানুষরা ঘোড়ার গাড়িতে বসে একটু সময় কাটাতেও পছন্দ করেন। আবার মালামাল টানতেও ঘোড়ার গাড়ী ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করার দৃশ্য সাধারণত দেখা যায়না। এটি যেন রুপকথার মতো গল্প। কিন্তু রুপকথা নয় বাস্তবেই ঘোড়া দিয়ে হালচাষ হচ্ছে নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের গোল্লারপাড় ও বালুঘাটা গ্রামে।

গোল্লারপাড় ও বালুঘাটা গ্রামে অন্তত ২০ জন আছেন যারা ঘোড়া লালন পালন করেন আর ঘোড়াকেই তাদের আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। তারা বছরের কিছু সময় ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মালামাল আনা নেয়া করেন। আবার ইরি-বোরো ও আমন মৌসুম চারা রোপন করার লক্ষে জমি সমান করার জন্য ঘোড়া দিয়ে দেয়া হয় মই। ঘোড়া দিয়ে মই দিলে এতে তারা একর প্রতি ৭/৮শ টাকা এবং প্রতি কাঠা ৪০/৫০টাকা। আবার জমি চাষ দিলে প্রতি কাঠা (৫ শতাংশ) এর জন্য ২শ টাকা পান তারা। এতে তারা বাড়তি আয়ও করে থাকেন।

ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহকারী ইলিয়াস আলী জানান, ঘোড়া আমি ৬ বছর আগে ছোট সময় ১২ হাজার টাহা দিয়ে কিনছি। তারপর ঘোড়ারে আস্তে আস্তে সোয়ারি হিসেবে বানাইছি। ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতায় আমি এই ঘোড়া দিয়ে অংশগ্রহণ করেছি মেলাবার। ঘোড়া দিয়া মালামালও টানি। যখন আবার ইরি-বোরো ও আমন মৌসুম শুরু হয় তখন একটু রোজগারের জন্য চাষাবাদের কামও করি। মালামাল টানার চাইতে চাষাবাদের কাজে একটু রোজগার বেশি হয়। দিনে ঘোড়া দিনে ২/৩ একর জমি মই দেওন যা আরকি। আর আমরা প্রতি কাটা ৪০/৫০ টাহা নেই। আর প্রতি কুড় বা একর প্রতি ৭/৮শত টাহা নেই। আর জমিতে হাল দিয়ে নিলে নেই প্রতি কাটা ২শত টাহা করে। এতে করে তারা দিনে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাহা পাই। এতে আমাদের দিনে ভালাই কামাই হই।

জমির মালিক মো: মারুফ হাসান বলেন, আমাদের এলাকায় বড় কোন গরু বা মহিষ নাই। তারজন্য ঘোড়া দিয়ে আমাদের জমিগুলোতে মই দিতে হয়। ঘোড়া দিয়ে মই দিলে ঘোড়া ওয়ালা প্রতি কাঠায় ৪০ টাকা কইরা নেই আরকি।

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড: মুহিত কুমার দেবনাথ নিউজবাংলাকে বলেন, এক সময় ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন ছিল। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘোড়ার গাড়ীও প্রায় ওঠেই গেছে। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা রিয়ার দেখা যায় না। এখন যান্ত্রিক উপায়েই জমি চাষ করে কৃষকরা। তবে গোল্লারপাড়ে অনেকেই তাদের বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে মই দেয় বা হালচাষ করে।

তিনি আরো জানান, বর্তমান আধুনিক যুগে যেখানে কৃষি চাষাবাদ হচ্ছে আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে। কৃষি বিভাগ সমসময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
MMR ২৯ আগস্ট, ২০২১, ২:৪২ পিএম says : 0
মাসা-আল্লাহ ভালো একটা ব্যাবস্থা
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন