স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, মৎস্যখাত বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এদেশে অনেক প্রাকৃতিক নদ-নদী ও জলাশয় রয়েছে। দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে দেশের কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে যেতে হবে। এজন্য মৎস্য উৎপাদনে যুব সমাজকে উৎসাহিত ও সম্পৃক্ত করতে হবে।
চতুর্থবারের মতো জাতীয় এবং প্রথমবারের মতো মৎস্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় মৎস্য পদক-২০২১ গ্রহণ করেছেন রাউজানের এমপি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। গতকাল রোববার মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজিত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সংসদ ভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার বলেন, প্রতি বছর মৎস্য সপ্তাহ পালন মৎস্য সম্পদের সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং জাতীয় মৎস্যপদক মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাঙালি জাতির কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত মৎস্যসম্পদ রক্ষায় বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’ স্লোগানকে স্বার্থক করে তুলতে সবার প্রতি আহবান জানান স্পিকার।
তিনি বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের অবদান ১৯৭২ সালে জাতির পিতা অনুভব করেছিলেন এবং ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে এর শুভসূচনা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য উৎপাদনকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করছেন। জনগণের পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য মৎস্যখাতকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার কাজ করছে, যার সুফল জনগণ ভোগ করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে পরিপূরক। খাদ্যনিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অনেকেই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সাথে সংযুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ফলে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা নিধন রোধ, নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ যুগোপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সামুদ্রিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
এর আগে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ ভার্চুয়ালি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুভ উদ্বোধন করেন স্পিকার। পরে স্পিকারের পক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জাতীয় মৎস্য পদক-২০২১ প্রদান করেন। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। পরে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, হুইপ ইকবালুর রহিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এ.বি. তাজুল ইসলাম, সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ ভবন লেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, মহাশোল, সুবর্ণ রুই, পাবদা, গুলশা, গলদা চিংড়ির মোট ৯৮৩৫টি পোনা অবমুক্ত করা হয়।
এদিকে মৎস্য পদক পেলেন ফজলে করিম এমপি ২০১৩ সালে ‘পরিবেশ পদক’, ২০১৭ সালে ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক’ ও ২০১৮ সালে বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার সহ ৩টি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। সর্বশেষ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদায় মৎস্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ৪র্থবারের মতো এই জাতীয় পুরস্কার অর্জন করলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন