হাবিবুর রহমান : উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড বিতরণের তথ্য পেতে ১০৫ নম্বরে কল করার জন্য বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু কল সেন্টারের এ নম্বরটিতে ফোন করলে মোবাইলের যে বাটনগুলো চাপতে বলা হয়, তাতে কোনো তথ্যই মেলে না। প্রথম দিন থেকেই স্মার্টকার্ড বিতরণে অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকায় নির্ধারিত এলাকার বাইরের লোকজন ভিড় করেছেন। অনেকেই স্মাট কার্ড না পেয়ে ফিরে বাসায় ফিরে গেছেন। দ্বিতীয় দিনের ধারাবাহিকতা গতকালও এমন দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর রমনা থানাধীন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে আগের দিনের মতো গতকাল একই চিত্রই দেখা গেছে। স্মার্ট কার্ড বিতরণের প্রথম পর্যায়ে রমনার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে। ইস্কাটন গার্ডেন রোড এলাকার নাগরিকদের মধ্যে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু, নির্ধারিত এলাকার বাইরে থেকেও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রে স্মার্ট কার্ড নিতে যান অনেকে। রমনা থানাধীন দিলু রোডের মো. জাকির হোসেন এসেছেন স্মার্ট কার্ড নিতে। সরকারি এই কর্মকর্তা লাইনে দাঁড়িয়েও যখন স্মার্ট কার্ড পাওয়ার বিষয়ে কোনো সুরাহা পাচ্ছিলেন না, তখন সরাসরি রমনা থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে যান। থানা নির্বাচন অফিসার মাহবুবা মমতা হেনা তাকে বলেছেন ওই এলাকার স্মার্ট কার্ড বিতরণে এখনো সরকারি ভাবে তারিখ নির্ধারণ হয়নি। হলে আপনী পাবেন। এর পরে ফিরে যেতে হয় জাকির হোসেনকে।
এছাড়া সরাসরি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলের কি-পেডের ৯ চাপতে বলা হয়। কিন্তু ৯ চাপলে মিনিটের পর মিনিট অপেক্ষায় রেখে বলা হয়-সবক’টি চ্যানেল বন্ধ রয়েছে। স্মার্ট কার্ড প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জমান মো. সালেহ উদ্দীন। কিন্তু সংবাদটি প্রচারের পর পাঠকের কাছ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। এরইমধ্যে গত ৩ অক্টোবর ঢাকার দুই সিটির দু’টি থানায় শুরু হয় কার্ড বিতরণ। কিন্তু ওই কল সেন্টারের সেবা তবু চালু হয়নি। রাজধানীর রমনা থানা এলাকার বাসিন্দার নাসিমা বেগম বলেন, এ কেমন কথা! কল সেন্টার চালুর ঘোষণা দিয়ে সবক’টি চ্যানেল বন্ধ। প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সার্ভিস সেন্টারে কেউ ফোন রিসিভ করেন না। ৯ বাটন চাপলে ১০ মিনিট অপেক্ষার পরও রিসিভ করেনি। শুধু বলে, আপনার কলটি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রপূর্বক অপেক্ষা করুন। এটা কি ধরনের সেবা? কল সেন্টারে কি ফোন ধরার কেউ নেই! ওই নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়ে বিষয়টির সত্যতাও পাওয়া গেছে। তখন রমনা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবা মমতা হেনা জানান আপনী এসএমএস দিবেন। তখন উত্তর পেতেন। এদিকে একই নম্বরে মেসেজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ স্মাট কার্ড পাওয়া ভোটাররা। তাদের অভিযোগ, ১০৫ নম্বরে মেসেজ করার নিয়মটি ভুল। ইসি বলেছিল- ঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে এনআইডি নম্বর লিখে ১০৫ নম্বরে সেন্ড করলে জানানো হবে কবে, কোথায় সংশিষ্ট ব্যক্তির স্মার্ট এনআইডি দেওয়া হবে। কিন্তু এভাবে মেসেজ করলে ঝঈ লেখার পর স্পেস দিয়ে ঘওউ লিখে স্পেস দিয়ে এনআইডি নম্বর লিখে সেন্ড করতে বলা হয়। অন্যদিকে ওয়েবসাইট থেকে স্মার্ট কার্ড বিতরণের তথ্য পেতেও হয়রানির অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে ইসির স্মার্ট কার্ড প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, কল সেন্টারের চ্যানেল বন্ধ থাকার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ঠিক করছি। আর এসএমএস পদ্ধতিতে ভুল ছিল। তবে সেটা ঠিক করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। কেন এমন হলো বিষয়টা দেখবো। আর অনলাইন থেকে তো সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন