শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বান্দরবানে সেনাবাহিনী ও বন বিভাগের সহয়াতায় রিজার্ভ ফরেস্টে হেলিকপ্টার থেকে বীজ ছিটানো হয়েছে

বান্দরবান থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ২:২২ পিএম

দেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক বনাঞ্চল বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাংগু ও মাতামুহুরী রিজার্ভ বন সংরক্ষণে সেনাবাহিনী ও বন বিভাগের সহায়তায় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আকাশ থেকে এ দুটি রিজার্ভ বনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতি গাছের বীজ ছিটানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ৩১ আগষ্ট সকালে জেলার দূর্গম আলীকদম উপজেলার সেনা জোন অফিসে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বান্দরবান সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জিয়াউল হক পিএসসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আওয়াল সরকার , বান্দরবান ৫৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন, ৩২ আনসার ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক এএসএম আজিমউদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়েদ ইকবাল, বান্দরবান বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ মিয়া। লামা বন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়সার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, আলীকদম উপজেলার মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন মাতামুহুরী ও থানচি উপজেলার বিস্তীর্ণ সাঙ্গু রিজার্ভের যেসব এলাকায় গাছের সংখ্যা কম সেসব এলাকায় হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বীজের মধ্যে চাপালিশ, গর্জন, চম্পা সহ দুর্লভ প্রজাতির বীজ ছিটানো হবে।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে সর্বপ্রথম রিজার্ভ ফরেস্টে বীজ ছিটানোর কথা শোনা যায়। সাঙ্গু-মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানচি ও আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত। এটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের অংশ। ১৮৮০ সালে সাঙ্গু-মাতামুহুরী বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এর আয়তন প্রায় ৭৪,০০০ হেক্টর। এটি পার্বত্য অঞ্চলের সর্বপ্রথম সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত বনাঞ্চল।, যা দেশে একমাত্র কুমারী (ভার্জিন) বনাঞ্চল হিসেবেও পরিচিত। এই বনাঞ্চলের মধ্যে রয়েছে শঙ্খ বা সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি স্থল। সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে রয়েছে সাঙ্গু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ২০১০ সালে সাঙ্গুও মাতামুহুরী বনাঞ্চলের ২৩৩২ হেক্টর তথা ৫৮৩০ একর এলাকা নিয়ে এ অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হয়,। যা সরকার কর্তৃক ঘোষিত দেশের মোট ২৩টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মধ্যে ৯ম বৃহত্তম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।

চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আওয়াল সরকার বলেন, বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরি রিজার্ভের যেসব এলাকায় গাছের সংখ্যা কম সেসব এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বীজ ছিটানোর উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে আগে জানানো হয়েছে। ফলে
আজকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বান্দরবান ও লামা বনবিভাগের নিজস্ব উদ্যোগে এ কাজটি করা হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির বীজের মধ্যে চাপালিশ, গর্জন, চম্পা সহ দুর্লভ প্রজাতির বৃক্ষ ছিল । এ প্রজাতির অনেক গাছ এখন রিজার্ভ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মূলত রিজার্ভ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য বন বিভাগ এই উদ্যোগ নিয়েছে।

আকাশ থেকে বীজ ছিটানো সফল হলে পরবর্তীতে আরো বড় পরিসরে এ ধরনের কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানান, বান্দরবান ও লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া ও এস এম কায়সার । তারা বলেন , হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উপর থেকে বীজ ছিটানো হলে এতে বীজের অঙ্কুরোদগম কেমন হবে তা একটি পরীক্ষার বিষয়। অধিকাংশ বীজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে কিছু পরিমাণ বীজও যদি অঙ্কুরোদগম হয় তাও বনাঞ্চলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য সহায়ক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

অনুষ্ঠান শেষে আকাশ থেকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে এ দুটি রিজার্ভ বনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বীজ ছিটানো হয়।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন