নারী-পুরুষের জটিল যৌন রোগগুলোর মধ্যে গনোরিয়া এমন একটি আত্মঘাতী রোগ যা যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে এক পুরুষ থেকে অন্য নারীতে বা এক নারী থেকে অন্য পুরুষে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এ রোগের ক্ষেত্রে রক্তের সঙ্গে জীবাণুর সংস্পর্শ খুবই কম। এটি বংশ পরম্পরায় সংক্রমিত হয় না। অবাধ যৌন মিলনের ফলে নারী বা পুরুষের যৌনাঙ্গে এ জীবাণু ক্ষত সৃষ্টি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে চুলকানি হয়। চুলকানি থেকে ঘা ও পুঁজের সৃষ্টি হয়। এ পুঁজ যদি অন্য নারী বা পুরুষের যৌনাঙ্গে স্পর্শ করে তাহলে এ জীবাণু তাদের যৌনাঙ্গে প্রবেশ করে এবং আত্মঘাতী ব্যাধি সেখানে বাসা বাঁধে এবং ক্ষতের সৃষ্টি করে।
গনোরিয়া রোগের লক্ষণসমূহ : প্রস্রাবে জ্বালা অনুভূত হতে থাকে। প্রস্রাবের পরে চাপ দিলে সামান্য আঠা আঠার মতো পুঁজ দেখা দেয়। চিকিৎসা না করালে ধীরে ধীরে প্রস্রাবের জ্বালা ও ব্যথা বৃদ্ধি পায়। পুরুষের ইন্দ্রিয় বাইরে ও নারীর যোনির চারদিকে ঘা হতে দেখা যায়। এসব ঘায়ে জ্বালা ও তাতে পুঁজ হয়ে থাকে। ক্রমশ ঘা আরও ছডিয়ে পড়ে। এ সময় ব্যথা বেড়ে যায়। অনেক সময় প্রস্রাব বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় এবং প্রস্রাব করতে ভীষণ কষ্ট হয়। অল্প অল্প জ্বর দেখা দেয়। জ্বরের সঙ্গে মাথাধরা, গা-হাত পা ম্যাজ ম্যাজ করা ইত্যাদি হয়। ঋতুস্রাব বেশি হতে থাকে। কখনো মাসে দুবার হয়। আবার কখনো ঋতুস্রাব শেষে শ্বেতস্রাব হতে থাকে।
ভয়াবহ ক্ষতিকর দিকগুলো : এ রোগ হলে পুরুষের চেয়ে নারীদেরই বেশি ক্ষতি হয়। নারীর সঙ্গে তার সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। নারীর ডিম্ববাহী ও নারীর ডিম্বকোষ আক্রান্ত হলে নারী বন্ধ্যাত্ব বরণ করতে পারে। কখনো কখনো গর্ভবতী হওয়ার প্রথম অবস্থায় ওই রোগ হলে গর্ভস্থ ভ্রূণ গর্ভপাত হয়ে পড়ে যায়, তার জরায়ু থেকে প্রচুর রক্তপাত হতে থাকে। গর্ভের শেষ অবস্থায় এ রোগ হলে সন্তান জন্মের সময় তার চোখ আক্রান্ত হয়ে শিশু অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
গনোরিয়া রোগের চিকিৎসা : হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় গনোরিয়া রোগের সমাধান বিদ্যমান। সঠিক চিকিৎসা নিলে ও নিয়মিত ওষুধ সেবন করলে গনোরিয়ার জীবাণু মূল থেকে চিরদিনের জন্য দূর হয়ে যায়।
করণীয় : যদি রোগীর জ্বর থাকে তাহলে জ্বরের জন্য হালকা খাবার যেমন- পাউরুটি জাতীয় হালকা ও তরল খাবার বেশী দিতে হবে।
বর্জনীয় : একাধিক মেলামেশা হতে সর্বাস্থায় বিরত থাকতে হবে। আত্মঘাতী গনোরিয়া রোগ হলে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন করা যাবে না। স্বামী-স্ত্রীকেও আগে পূর্ণ চিকিৎসা দ্বারা সুস্থ হতে হবে। না হলে এর ফল খুবই খারাপ হবে।
এস এম আবদুল আজিজ
চিকিৎসক, আল-আজিজ হেলথ সেন্টার, ৫৩-পুরানা পল্টন,
বায়তুল আবেদ, ঢাকা, মোবাইল : ০১৭১০ ২৯৮ ২৮৭, ০১৯১১ ০২০ ৬৬৪।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন