শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা জরুরি

অজয় কান্তি মন্ডল | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্য মানুষের অধিকার। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে খাদ্য প্রধান। জীবন ধারণের জন্য যেমন খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই, তেমনি সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন বিশুদ্ধ ও পুষ্টিকর খাদ্য। আর এ বিশুদ্ধ খাদ্য সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে একান্ত অপরিহার্য। যদিও আমাদের দেশের বাস্তবতায় নিরাপদ ও বিশুদ্ধ খাদ্য ব্যবস্থাপনা বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম। সবখানে ভেজালের এত বেশি ছড়াছড়ি যে, বহু চেষ্টার পরেও মানুষের বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাদ্যের প্রাপ্যতা আজ বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর জেনেও এক একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী খাবারে মেশাচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। আবার অনেক কৃষক যথাযথ জ্ঞানের অভাবে না জেনেই ব্যবহার করছে মাত্রারিক্ত নানা ধরনের কীটনাশক ও বৃদ্ধি হরমোন, যার প্রভাবে জনস্বাস্থ্য আজ হুমকির মুখে।

শাকসবজি উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাতের প্রতিটা পরতে পরতে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর এবং মাত্রারিক্ত সব রাসায়নিক পদার্থ। দেশের অধিকাংশ কৃষক, অধিক ফলন এবং দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়ার আশায় কোন রকম মাত্রা নির্ধারণ ছাড়াই ফসল ও সবজিতে প্রচুর পরিমাণে হরমোন ব্যবহার করে। এছাড়া পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে অনিয়ন্ত্রিত মাত্রার কীটনাশক অহরহ ব্যবহার করা হয়। কৃষকদের এসব হরমোন ও কীটনাশক ব্যবহারের সঠিক মাত্রা ও সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকায় উৎপাদিত ফসল জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করার সময়ও আরেক দফায় সেখানে মেশানো হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। শাকসবজিকে টাটকা ও সতেজ দেখানোর জন্য দীর্ঘক্ষণ কপার সালফেটের পানিতে (তুঁতে) ডুবিয়ে রেখে তারপরে বাজারে ওঠানো হয়। ফলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে থাকে। মৌসুমি ফল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে ফলে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান। তরমুজের ভেতর লাল রঙ তৈরির জন্য ভিতরে সিরিঞ্জ দিয়ে দেওয়া হয় তরল পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট। বিভিন্ন ফল পাকানোর সময় ব্যবহৃত হয় ক্যালসিয়াম কার্বাইড। আর দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয় ফরমালিন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে শাকসবজি ও ফলমূলের জুড়ি নেই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এগুলোতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বাড়েই না উপরন্তু এগুলো খাওয়ার মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে মারাত্মক সব রোগ।

দুধ সুষম খাদ্য তালিকার অন্যতম একটি উপাদান। কিন্তু বর্তমানে এই সুষম খাবারটি ও বিষে পরিণত হয়ে গেছে। পূর্বে দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রির কথা প্রচলিত থাকলেও বর্তমানে দুধে ভেজালের পরিমান বহুগুনে বেড়ে গেছে। যেমন গরুর শরীরে পিটুইটারি ইনজেকশন দিয়ে দুধের পরিমাণ কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হচ্ছে। যেটা মানব স্বাস্থ্যের জন্য বড় রকমের ঝুঁকি। বেশিদিন সংরক্ষণের জন্য দুধে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। কয়েক বছর আগে শোনা গিয়েছিল পাস্তুরিকৃত দুধে মলের জীবাণু পাওয়া গেছে। এসব ক্ষতিকারক দুধ দিয়েই আবার বানানো হচ্ছে বিভিন্ন লোভনীয় খাবার বা মিষ্টি জাতীয় পণ্য। কিন্তু সেখানেও ভেজালের কমতি নেই। মাঝেমধ্যে দেখা যায় টিস্যু পেপার দিয়েও ছানা, রসগোল্লা বানানো হয়েছে। চিনি জাতীয় খাবার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তার উপর মিষ্টি বানানোর সময়ে ভেজাল দুধ ব্যবহার ও তার সাথে নানান অপদ্রব্য মেশানোর পাশাপাশি চিনির পরিবর্তে নিষিদ্ধ ঘন চিনি ব্যবহৃত হচ্ছে। সোডিয়াম সাইক্লামেট নামের মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থটি ঘন চিনির প্রধান উপাদান, যা নির্দ্বিধায় ব্যবহৃত হচ্ছে, মিষ্টি, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কন্ডেন্সড মিল্ক প্রভৃতি মিষ্টি জাতীয় খাদ্য দ্রব্যে। চিনির চেয়ে প্রায় পঞ্চাশ গুণ বেশি মিষ্টি এই ঘন চিনি পৃথিবীর অনেক দেশেই নিষিদ্ধ হলেও আমাদের দেশের আসাধু ব্যবসায়ীরা এগুলো বিক্রী করছে। আবার ভেজাল ঘন চিনির সাথে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার মেশানো হচ্ছে। স্বাদহীন এই রাসায়নিক পদার্থটি দামে স্বস্তা এবং দেখতে হুবহু চিনির মতো হওয়ায় ঘন চিনির সাথে মেশালে কোনোভাবেই এর অস্তিত্ব বোঝার উপায় থাকছে না। যেটা বিষের সাথে বিষ মেশানোরই শামিল। দাম কম হওয়ায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা কোনরকম আগে পরে চিন্তা না করে এই ভেজাল মিশ্রিত ঘন চিনিই কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

দ্রুত বর্ধনশীল অনেক মাছ চাষের সময় সেগুলো বিভিন্ন আবর্জনা খাইয়ে দ্রুত বড় করা হয়। উক্ত আবর্জনার সাথে মিশ্রিত বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মাছের শরীরের সাথে মানব দেহে প্রবেশ করছে। যেগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। মাছ পচার হাত থেকে রক্ষা করতে খুচরা ব্যবসায়ীরা ব্যবহৃত করছে ফরমালিন। মাংসের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। দেশের নিন্ম আয়ের মানুষের ফার্মের মুরগি একটি নিত্ত নৈমত্তিক খাবার। ঢাকা শহর থেকে শুরু করে দেশের সব বিভাগীয় পর্যায় এমন কি গ্রামে বসবাসকারী মানুষের কাছেও দামে সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হওয়ায় ফার্মের মুরগি বেশ আগে থেকেই সবার জনপ্রিয়। কিন্তু গবেষণায় উঠে এসেছে, ফার্মের মুরগির শরীরে ক্ষতিকর অনেক জীবাণু এবং রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি। দ্রুত বাড়ার জন্য মুরগির দেহে হিউম্যান অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। এর ফলে মুরগির দ্রুত বাড়তে খুব বেশি খাবার দেয়ার দরকার হয় না। এছাড়া দানাদার যেসব খাবার মুরগিকে দেয়া হয়, তাতেও মিশ্রণ করা হয় নানারকম রাসায়নিক উপাদান। চামড়ার ট্যানারিগুলোতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার পর চামড়ার উচ্ছিষ্টগুলো দিয়েই খাবার প্রস্তুত করে চলেছে মুরগির খাবার প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো। তাতে পাওয়া গেছে ভয়াবহ মাত্রার ক্রোমিয়াম। এই ক্রোমিয়াম মানুষের শরীরে প্রবেশ করে মানুষের শরীরের কোষগুলো নষ্ট করে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। মুরগির শরীরে ব্যবহৃত নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন ও ওষুধে লুকিয়ে আছে মরণঘাতী ব্যাকটেরিয়াসহ মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর মারাত্মক জীবাণু। গরুর মাংসের ক্ষেত্রেও অনুরূপ পদ্ধতি দেখা যায়। দ্রুত বৃদ্ধির জন্য গরুর শরীরে দেওয়া হয় বিভিন্ন গ্রোথ হরমোন। ঈদের সময় কিছু গরুর গোশত বৃদ্ধির জন্য এমন কিছু হরমোন ব্যবহার করা হয়, যাতে ঈদের চার-পাঁচ দিনের মধ্যে গরুটি বিক্রি না হলে সেটি মারা যায়। এ ধরনের গোশত মানুষের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।

ভাত বাঙালির প্রধান খাদ্য। কিন্তু চাল প্রক্রিয়াজাতকরণে আছে ভেজালের দীর্ঘ ইতিহাস। ক্রেতাদের কাছে চাল অধিক আকর্ষণীয় করতে কয়েকবার সিদ্ধ করে এবং বিভিন্নভাবে চাল ছাঁটাই করা হয়। ফলে চালে থাকা ভিটামিন-বি নষ্ট হয়ে যায়। চাল আকর্ষণীয় করতে রঙের সাথে মেশানো হয় নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য যেমন: সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড, অ্যারারুট ও পুরানো নষ্ট ময়দা। এছাড়া ও গুঁড়া পাথর, কাঁকর, ইটের গুঁড়া মিশিয়ে চালের ওজন বাড়ানো হয়।

বেকারির অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী পানির বোতলে দূষিত পানি, মুড়িতে ইউরিয়া, বিষাক্ত এনার্জি ড্রিংক ও জুস, শিশুখাদ্যে ও ভয়াবহ এবং ক্ষতিকর কেমিক্যাল পণ্য মেশানো হয়। মেশানো হয় মসলায় ইটের গুঁড়া এবং হলুদে লেড ক্রোমেট বা লেড আইয়োডাইড। ভেজালের এই তালিকা এত দীর্ঘ যে, বলে শেষ করা যাবেনা। ক্রেতা এখন খাঁটি জিনিস চড়া মূল্য দিয়েও বাজারে কিনতে পায়না।

পচা বাসি খাবারের চিত্র প্রায় সব রেস্তোরাঁতেই চোখে পড়ে। বাদ যায়না নামীদামী অনেক রেস্তোরাঁও। শিশুদের জন্য তৈরি কৃত বিভিন্ন কোম্পানির জুস, চকলেট, চানাচুর ইত্যাদি উৎপাদনে কোম্পানিগুলো কোনরকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে দেদারসে বানিয়ে বাজারজাত করে যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তার পাশে, বিভিন্ন পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রের আশপাশে গড়ে ওটা রেস্তোরাঁ বা খোলা খাবারের দোকানগুলোর কতটা স্বাস্থ্য সম্মত সেটার প্রশ্ন থেকেই যায়। এসবের কিছু কিছু মাঝেমধ্যে মিডিয়ায় আসে আবার অধিকাংশ চাপা পড়ে যায়। মানুষ জেনে অথবা না জেনে খাবারের পরিবর্তে এসব বিষ গ্রহণ করে নিজেদের আরও একধাপ নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ফরমালিন ব্যবহৃত হয় মৃতদেহ সংরক্ষণের কাজে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ সেটাকে খাদ্যে ব্যবহার করছে। টেক্সটাইল কারখানায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ডাই বা রঞ্জক (রঙ) পদার্থ মানব দেহে প্রবেশের পরে দেহের প্রতিটা অঙ্গকে ক্ষতি করে। গলবিলে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য ফরমালিনকে দায়ী করা হয়। ডাই বা রঞ্জক (রঙ) পদার্থ মানব দেহের লিভার, কিডনি, হৃদপিন্ড, অস্থিমজ্জা ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। তরুণদের বেলায় এসব প্রভাব ধীরে দেখা গেলেও শিশু ও বৃদ্ধদের বেলায় দ্রুতই দেখা দেয়। খাদ্যপণ্য ভেজালের কারণেই দেশের মানুষের বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনি ফেলিউর, হৃদযন্ত্রের অসুখ, হাঁপানি সহ আরও জটিল রোগ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে রোগীদের লাইন লম্বা থেকে লম্বাতর হচ্ছে। শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার, কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ। এছাড়াও মাতৃ স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিলে দেখা যায় একজন গর্ভবতী মা ভেজাল মুক্ত খাবার পায়না। যার ফলে তাঁর গর্ভের শিশুটিও বেড়ে ওঠার আশানুরূপ পরিবেশ পায়না। এসব কারনে গর্ভপাত এবং বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম এখন অনেকটা নিত্ত নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশে চাষযোগ্য কৃষি জমির তুলনায় জনসংখ্যার চাপ অধিক। আর বাড়তি এই জনগণের খাদ্য চাহিদা মেটাতে হাইব্রিড সবজি চাষ, মাংস উৎপাদন অনেকটা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। সারাবিশ্বে ও এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বহির্বিশ্বে হাইব্রিড সবজি, ফলমূল, মাস, মাংস উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় যথাযথ হরমোন ব্যবহার করা হয়। সেখানে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ খাবারের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, আমাদের দেশে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা নেই। উপরন্তু দেশের বাজারে এসব হরমোনের বেশ সহজলভ্যতাও রয়েছে। যার ফলে কৃষক সেগুলো সহজে হাতের নাগালে পেয়ে ইচ্ছামত ব্যবহার করছে। কীটনাশকের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এথেকে উত্তরণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া অতি আবশ্যক হয়ে পড়েছে। যেমন: হাইব্রিড সবজি, মাংস উৎপাদনে কৃষকদের যথাযথ প্রশিক্ষন থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরনের গ্রোথ হরমোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। নীতিমালা থাকতে হবে ফসল উৎপাদনে নিয়ন্ত্রিত মাত্রার কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। উপজেলা পর্যায়ে কৃষি অফিসগুলো নিয়মিতভাবে তদারকি করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে। এছাড়া উৎপাদিত খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য দেশের সরকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনসমূহ যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশি আধুনিক না হওয়ায় রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে সবজি বা ফলমূল পরিবহণে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয় এবং পথিমধ্যে অনেক নষ্ট হওয়ার ভয়ে কৃষক বা মধ্য স্বত্বভোগীরা নানা রকম ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি পূর্বক সেই সাথে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ তদারকিই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

জনগণের স্বদিচ্ছা ছাড়া সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা, এর সঙ্গে অনেক বিষয়াদি জড়িত। তারপরেও কিছু নিয়ম কানুন এবং যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার লাগাম এখনি টেনে ধরতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের সামনে খুবই খারাপ অবস্থা অপেক্ষা করছে সেটা সহজেই অনুমেয়।

লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
Email: ajoymondal325@yahoo.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন