ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী বর্তমান মেহেরপুরে কর্মরত সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যশোর সমন্বিত অফিসের একটি তদন্ত দল সুলতান মাহমুদের সেই সময়কার দুটি অর্থ বছরের যাবতীয় কাগজপত্র তলব করেছেন। গতকাল রোববার ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সেই সব কাগজ প্রেরণ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আশিকুর রহমান খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত বুধবার দুদক কর্মকর্তারা ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস পরিদর্শন করে কিছু কাগজপত্র তলব করেন। তারা ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সম্পন্ন করা ১৮টি প্যাকেজের আর.এফ.কিউ, বিল, ভাউচার, এমবি ও ওয়ার্ক অর্ডারের কাগজ চেয়েছিলেন।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ ঝিনাইদহে ওই সময় কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা দুদক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দুইদিন সময় নিয়ে তাদের চাহিদা মোতাবেক এ সব কাগজ রেডি করে পাঠিয়ে দিয়েছি।
দুদকের যশোর অফিসের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির বিষয়ে আমরা প্রথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেছি। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে দুই বছরের টেন্ডার ও কেনাকাটার কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। তদন্তের পর কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে বোঝা যাবে কি পরিমান দুর্নীতি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে কতিপয় ঠিকাদার দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেন্ডার ও কেনাকাটা ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। সে সময় দেশের একটি বেসরকারী টেলিভেশন ও বিভিন্ন পত্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ঝিনাইদহে আসেন।
সে সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিদর্শন বাংলোতে একটি চামচ কেনার ব্যায় দেখানো হয়েছে ৯৭ হাজার টাকা। ঠিকাদারদের অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আর.এফ.কিউ এর মাধ্যমে ৫০টি পর্দা কেনার ব্যায় দেখানো হয় ১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। প্রকৃতপক্ষে ৫০টি পর্দা ২৪০ টাকা দরে দাম পড়ে মাত্র ১২ হাজার টাকা। অফিসে দুই দফায় মবিল কেনা দেখানো হয়েছে ৪ লাখ টাকা। কিন্তু অফিসে মিলেছে ৪০ টাকা দামের গ্রিজের প্যাকেট। ১০টি মেহগনি গাছ রোপন বাবদ ব্যায় দেখানো হয়েছে ২ লাখ টাকা। একটি ব্র্যান্ডিং বিল বোর্ড তৈরি করতে খরচ দেখানো হয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। শৈলকূপায় ১১ কিলোমিটার খাল সংস্কার না করেই তুলে নেয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন