শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

২৯ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে রংপুরের মিঠাপুকুরের চাঞ্চল্যকর ইব্রাহিম হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ২৯ বছর পলাতক থাকার পর গতকাল সোমবার রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবুল কালাম উচ্চশিক্ষিত হলেও এতদিন কোনো চাকরিতে যোগ দেননি। ২০০১ সাল থেকে তিনি রাজধানীতে ‘রডমিস্ত্রির’ কাজ করছিলেন। পরিচয় গোপন রাখতে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের নামও পরিবর্তন করেন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

র‌্যাব জানায়, জমি নিয়ে বিরোধে ১৯৯২ সালে ঘটনার দিন রাতে স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার গুটিবাড়ী সরকারপাড়া এলাকায় খুন হয় ইব্রাহিম। পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যৃ হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় আবুল কালামসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। একই বছর মামলাটি তদন্ত শেষে তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে রংপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ইব্রাহিম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজন কারাগারে থাকলেও আবুল কালাম পলাতক ছিলেন।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক জানান, সম্প্রতি আমাদের কাছে আবুল কালামের বিরুদ্ধে সাজা ওয়ারেন্টের কাগজ আসে। এরপর র‌্যাব-৪ তাকে (আবুল কালাম) শনাক্তে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। অবশেষে সোমবার ভোরে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আবুল কালাম উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। তবে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি পলাতক ছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সালে দাখিল, ১৯৮৯ সালে আলিম এবং ১৯৯১ ফাজিল পাস করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও কখনো তিনি চাকরিতে যোগ দেননি। ২০০৭ সালে নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে বদরগঞ্জে বিয়ে করেন। তবে ছয় মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর বিভিন্ন সময় রংপুরে আত্মগোপনে থাকলেও ২০০১ সালে তিনি রাজধানীতে চলে আসেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ‘কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং’-এ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে ‘নাম’ও পরিবর্তন করে আজাদ মিয়া রাখেন।

তিনি আরো বলেন, এই হত্যাকান্ডের পর নিহতের বড় ভাই মামলা করেছিল। তবে কিছুদিন পর তিনি মারা যান। এছাড়া নিহতের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে তখন জীবিত ছিল। তারাই মামলা দেখভাল করত। কিন্তু হঠাৎই ইব্রাহিমের স্ত্রী ও ছেলে মারা যান। বাবা হত্যার সময় মেয়ে ছোট থাকায় তিনিও এই মামলার বিষয়ে তেমন কিছু জানতেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবুল কালামকে ধরতে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল। পরে র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন