নেছারাবাদে জোয়ারের হাঁটু সমান পানিতে ডুবে থাকে প্রায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের অর্ধশত ঘর । বর্ষা মৌসুমে এক থেকে দেড় ফুট পানির নিচে ডুবে থাকা ওইসব ঘরে বসবাস করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ঘরের মধ্য রান্না করা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়াসহ মলমুত্র ত্যাগেও অবর্নিয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। খালের চরে অথবা নিঁচু জমিতে প্রয়োজনীয় মাটি ভরাট না করেই এ সব ঘর নির্মান করা হয়েছে বলে তাদের এ দুর্ভোগ বলে অভিযোগ ঘরে বসবাস করা হতদরিদ্রদের। সমতল ভুমি অথবা খালের পাড়ের রাস্তা থেকে ওইসব ঘরের ভিত (ফ্লোর) অনেক নিচে থাকায় জোয়ারের সময় সহজেই ঘরের মধ্যে পানি ডুকে যায়। নির্মানের সময় ইটের গাথুনীর ভিত প্রয়োজন মত উঁচু করা হয়নি। মাথা গোজার ঠাই পেয়ে এতদিনে দরিদ্ররা কোনো অভিযোগ তোলেনি। আমাবশ্যা অথবা পুর্নিমার জোয়ারের সময় পানির চাপ বেশী থাকায় অনেক পরিবার বসত ঘর ফেলে রেখে অন্যত্র অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় জিরবাড়ি এলাকায় বাদল মিয়া ও সামছের আলীর ঘরের মধ্যে হাটু সমান পানি। ওই পরিবারগুলো ঘরের বাইরে গিয়ে অবস্থান করে ভাটির টানের অপেক্ষায় থাকেন। বাদলের স্ত্রী পারভীন জানান, খাটের ওপর চুলা বসিয়ে দুপুরে রান্না করেছেন। এখন পাশের উঁচু রাস্তায় বসে থাকব অথবা সামনের বাড়ি গিয়ে বসব। পরে ভাটির সময় পানি কমলে ঘরে যাবেন জানান পারভীন। বৃদ্ধ সামছের আলী বলেন, ঢাল চরে ঘর করার সময় নিজেরা মাটি দিয়ে ভিটি উঁচু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্যারেরা তাড়াতাড়ি ঘর বানানোর জন্য মাটি ভরাটের সময় দেয়নি। সোনারগোপ এলাকার বিন্না খালের চরে নির্মান করা তিনটি ঘর মনে হয় নদীর মধ্যে দাড়িয়ে আছে। এর একজন বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন জোয়ারের সময় পানিতে ঘরের পোতা (মেঝে) ডুবে যায় বলে পাশের বাড়িতে থাকি। কামারকাঠি খালের পাড়ে ৭/৮টি ঘর রাস্তা থেকে নিঁচু জমিতে নির্মান করা হয়েছে। একটি ঘরের মালিক দুলালের রুবেল বলেন, জোয়ারের সময় ঘরে পানি ডোকার পর অন্যান্য মালামালের সাথে জ্বালানী কাঠ পর্যন্ত ভিজে গেছে। তারপর ঘর তালা মেরে পাশেই থাকি। আটঘর কুড়িয়ানা ও সমদেয়কাঠি খালের পাড়ে নির্মান করা বেশ ক‘টি ঘর পানিতে তলিয়ে যেত। ওই ঘরগুলো বরিশাল,পিরোজপুর মেইন সড়কের পাশে হওয়ায় পানি ঠেকাতে ভেরী বাধ দিয়ে বালি ফেলে দিয়েছেন পিআইও। ভেরীবাধ দিয়ে বালু ফেলা হলেও এখন সামনের উঠোন আর ঘরের ফ্লোর সমান হয়ে গেছে।
ভুমিহীনদের ঘরের মধ্যে জোয়ারের পানি ডোকার বিষয় জানতে চাইলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানষ কুমার দাস বলেন,নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ৫/৭টি ঘরের সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া প্রথম দিকে জরুরীভাবে কয়েকটি ঘর করতে যেয়ে যেটুকু সমস্যা হয়েছিল, তা এখন মাটি ভরাট দিয়ে বসবাসের উপযোগী করে দিচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন