বিশেষ সংবাদদাতা : একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট খেলনার নামে বিদেশ থেকে আসল পিস্তল নিয়ে আসছে। বিমানবন্দর থেকে পিস্তলসহ গ্রেফতারকৃত দুই আসামির স্বীকারোক্তিতে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। ওই সিন্ডিকেট খেলনার নামে শুধু অস্ত্র নয়, ড্রোন ও রোবটও নিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নয়টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত জার্মান দুই নাগরিক মোহাম্মদ মনির বেগ আলী ও আনিসুল ইসলাম তালুকদারকে আটক করা হয়। বিমান বন্দরের গ্রিন চ্যানেল থেকে তাদের আটক করে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। জার্মান পাসপোর্টধারী ওই দুইজনকে আটকের পর তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে, তাদের আগে আরো দুই জার্মান পাসপোর্টধারী তানভীর হাসান ছোট মনি ও সাবু একই ধরনের আরেকটি চালান নিয়ে দেশে আসে। সূত্র জানায়, এই দুইজনসহ টাঙ্গাইলের জামিলুর রহমান মিরন ওই দুইজনকে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ইতোমধ্যে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। ওই সিন্ডিকেটের চার সদস্যের বাড়ি টাঙ্গাইলে। হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় তারা পালিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়। এরপর কৌশলে জার্মানির নাগরিকত্ব নিয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচালান চক্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে দেশে অস্ত্র আমদানি করছে। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততারও তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, সিন্ডিকেটের সদস্য ছোট মনি টাঙ্গাইলের ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল হত্যা মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে পুলিশের উপর বোমা হামলা, যুবলীগ নেতা নূরে আলম হত্যা চেষ্টা এবং যুবলীগ নেতা মামুন ও মন্টুর বাড়ি ভাংচুর মামলার অভিযোগ রয়েছে। সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও এ ধরনের নানা সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, আটককৃত পিস্তলগুলো প্রাথমিক পরীক্ষার পর গোয়েন্দারা বলছে, বিভিন্নভাবে এগুলো ব্যবহার করা যাবে। পিস্তলের ব্যারেল পরিবর্তন করলেই এগুলো আসল পিস্তলে রূপ পাবে। বুলেট ব্যবহার করে প্রাণহানি করা সম্ভব হবে এই অস্ত্র দিয়ে। এছাড়া গ্যাসও ব্যবহার করা যাবে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এসব মালামাল ঢাকায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান সাংবাদিকদরে বলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে যেটা সন্দেহ হবে সেটাই তল্লাশি করে দেখা হবে। কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। যেসব খেলনা পিস্তল আনা হয়েছে, সেসবের অনুমতি নেই। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ওই মালামালগুলো আমদানি করায় আইন অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন