ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি বিয়ে জটিলতার পর মামলা করতে গেলে বর ও কনে দুই পরিবারের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুল হাসানকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন নির্দেশ পেয়ে এএসআই কামরুল দু'পক্ষের টাকা ফিরিয়ে দিলেও নেয়নি মেয়ে পক্ষের বাবা।
অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান এ নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ছুটিতে থাকায় এখননো পুলিশ লাইন্সে যোগ দেননি এএসআই কামরুল হাসান।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের বলেন, শনিবার রাতে এএসআই কামরুল হাসানকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। আদেশের আগেই কামরুল হাসান ছুটি নিয়ে নেত্রকোনায় গ্রামের বাড়িতে থাকায় পুলিশ লাইন্সে যোগ দিতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে- জবাবে এ বিষয়ে ‘কিছুই জানেন না’ বলেন তিনি।
উল্লেখ্য গত ১৩ আগস্ট উপজেলার উচাখিলার আলাদিয়া গ্রামের তারা মিয়ার নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মিজান মিয়া বিজয়ের সঙ্গে প্রতিবেশী এক মামাতো বোনের জোরপূর্বক পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে দেওয়া হয়। বরের বয়স ছিল ১৪, কনের ১৮-এর উপরে। জোরপূর্বক বিয়ের পর কনের বাড়িতে আটকে রাখার কয়েকদিনের মাথায় নতুন জামাই-বউকে কৌশলে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে বরের পরিবার থেকে কিশোর বিজয়কে উদ্ধার এবং কনের পরিবার থেকে বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে মারধর ও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করতে দুই পক্ষ থানায় যায়। মামলা নথিভুক্ত করতে বিজয়ের পরিবার থেকে ২৪ হাজার ও কনের পরিবার থেকে ২৭ হাজার টাকা ঘুষ নেন এএসআই কামরুল হাসান।
বিজয়ের নানা কলিম উদ্দিন দাবি করেন, ‘নাতি বিজয়কে উদ্ধারের জন্য থানায় এলে মামলা নথিভুক্ত করতে গ্রাম পুলিশ মানিকের মাধ্যমে এএসআই কামরুল হাসান প্রথমে চার হাজার টাকা পরে ওসি স্যারকে দেওয়ার নামে আরও ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।’
অন্যদিকে, এএসআই কামরুল বর বিজয়কে ফিরিয়ে দিতে কনের পিতার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। চাপের মুখে বিজয়কে বের করে দেওয়া হয়। তবে কনের পিতা মামলা করতে গেলে তার কাছ থেকে প্রথমে চার হাজার পরে দফায় দফায় আরও ২৩ হাজার টাকা ঘুষ নেন। এক পর্যায়ে মামলা নথিভুক্ত করতে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করলে বিষয়টি শনিবার দুপুরে কনের পরিবারের লোকজন জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে শনিবার রাতেই এএসআই কামরুল হাসানকে ঈশ্বরগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়ে পুলিশ লাইন্সে যোগদানের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন