মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডেঙ্গু উৎকণ্ঠা সর্বত্রই

হাসপাতালে রোগী সামলাতে হিমশিম রাজধানীর পাড়ায় মহল্লায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা ক্লিনিকগুলোয় চিকিৎসা নিচ্ছেন অসংখ্য রোগী জরিপ ও গবেষণা ফলাফল- এডিসের প্রাদুর্ভার আশঙ্কা নিয়ে আগাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

কোনো কিছু হিসেবের খাতায় রয়েছে অথচ বাস্তবে না থাকলে ‘কাজীর গরু কেতাবে রয়েছে গোয়ালে নেই’ প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এবার ডেঙ্গু জ্বর ইস্যুতে এই প্রবাদ যেন উল্টো দিকে ঘুরছে। রাজধানী ঢাকার হাসপতাল ও ক্লিনিকগুলোতে অসংখ্য ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন অথচ সরকারের হিসেবের খাতায় তাদের নাম নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিন প্রকাশ করছে। গতকালও জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ফলে চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ১৫ হাজার ৬৫ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাস্তবে গতকালও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এই রোগী সংখ্যা তিন থেকে চারগুণ বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে। রাজধানীতে ব্যাঙের ছাড়ার মতো গজিয়ে উঠা কিছু ক্লিনিকে দেখা গেছে অসংখ্য ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমনকি সরকারি শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে কোনো সিট খালি না থাকায় নতুন রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ১ হাজার ২৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৪৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ২০০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। অথচ রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকায় পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠা হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গতকাল কয়েশ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ সব হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শত শত রোগী।

জানতে চাইলে, ঢাকা শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিদিন যে পরিমাণে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হতে আসছে, আমরা সবাইকে ভর্তি করতে পারছি না। হাসপাতালের সব শয্যায় রোগী ভর্তি থাকায় নতুন রোগীর জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন।

অদৃশ্য করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত কমে আসায় দেশের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খুলেছে। কিন্তু নতুন করে আতঙ্কা-উৎকণ্ঠা ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। দৃশ্যমান এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু রোগের ভয়ে রাজধানী ঢাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন শত শত রোগী। ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলো ছাড়াও পাড়ায়-মহল্লায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা ক্লিনিকগুলোতে রোগী ভর্তি হচ্ছে। অথচ স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে জানাচ্ছে, দৈনিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা আড়াইশ’ থেকে তিনশ’র ঘরে। অথচ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে শুধু যাত্রাবাড়ী এলাকার আশেপাশের এলাকার ক্লিনিকগুলোতেই প্রতিদিন শত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রাজধানী ঢাকায় গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব বেড়েছে চারগুণ। আর মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়া না হলে, আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত মশার ঘনত্ব বেড়ে চরমে পৌঁছাবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমন তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, প্রতি মাসেই যাতে মশার ঘনত্ব কেমন হচ্ছে তা তুলনা করার জন্য এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। জানুয়ারির শেষের দিকে দেখা যায় যে, মশার ঘনত্ব অন্য সময়ে যা থাকে তার চেয়ে চারগুণ বেশি বেড়েছে। মশার ঘনত্ব কেমন বাড়ছে সেটা জানতে ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, শনির-আখড়া, শাঁখারিবাজার, মোহাম্মদপুর ও পরীবাগসহ ৬টি এলাকার নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হয়। এসব জায়গায় গড় ঘনত্ব প্রতি ডিপে (মশার ঘনত্ব বের করার পরিমাপক) মশা দেখা যায় ৬০টিরও বেশি। অন্যান্য সময় পাওয়া যেত ১৫ থেকে ২০টি। কীট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে মশা নিধনের পরামর্শ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দিক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যথাসময়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং এডিস মশার লার্ভা নিয়ে গলাবাজি করে সময় নষ্ট করায় মশার প্রাদুর্ভাব বেগে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর ‘মৌসুম এডিস জরিপ ২০২১’ ফলাফল প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বেশি। সবচেয়ে বেশি ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ মগবাজার, নিউ ইস্কাটন, বাসাবো ও গোড়ান এলাকায়। গত ২২ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ‘মৌসুম এডিস জরিপ ২০২১’ এর ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানে জরিপ পরিচালনা করে। যার মধ্যে উত্তরের ৪১টি এবং দক্ষিণের ৫৯টি এলাকা। জরিপে ৩ হাজার বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। দুই সিটি কর্পোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডের ১৯টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ এর বেশি। দুই সিটি কর্পোরেশনের ৫৬টি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ বা তার বেশি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবো ও গোড়ান এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স সর্বোচ্চ ৭৩ দশমিক ৩। এছাড়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ৬৬ দশমিক ৭, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আর কে মিশন রোড ও টিকাটুলিতে ৫০, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বনশ্রীতে ৪০ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিন্টো রোড ও বেইলি রোডে ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ শতাংশ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ৫৬ দশমিক ৭ পাওয়া গেছে। এই ওয়ার্ডে রয়েছে মগবাজার, নিউ ইস্কাটন এলাকা। এছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও নিকুঞ্জ নিয়ে গড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ৪৮ দশমিক ৪। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর ও দারুস সালাম এলাকায় ৪৬ দশমিক ৭, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়ায় ৪৩ দশমিক ৩ এবং মহাখালী ও নিকেতন এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ৪০।

স্বাস্থ্য অধিদফতর রাজধানী ঢাকার মশা নিয়ে এই ভয়াবহ চিত্র প্রকাশের পরও দুই সিটি কর্পোরেশন মশা নিধণের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং মশা মারতে দুই সিটির মেয়র ‘কথার কামান’ দাগিয়েছেন।

এরই মধ্যেই রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট ডেনভি-৩ শনাক্ত হয়েছে। এখন এই ভ্যারিয়েন্টে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন রাজধানী ঢাকার রোগীরা। ২০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গবেষক ড. সেলিম খান। তবে বঙ্গবন্দু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুন্সি জানান, ২০১৭ সালের আগে ডেনভি-১, ২-তে আক্রান্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে অনেকের। কিন্তু ডেনভি-৩ এর বিরুদ্ধে এই ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি। যারা আগের দুই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত তারা নতুন করে ডেনভি-৩ আক্রান্ত হলে হেমোরেজ (সঙ্কটাপন্ন) অবস্থায় পড়েছেন। ডেঙ্গুর ডেনভি-৩ ভ্যারিয়েন্ট ডেনভি-১ ও ২ এর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর।

গতকাল রাজধানীর শনির আখড়া ও যাত্রবাড়ীর বেশ কয়েকটি ক্লিনিকে দেখা গেছে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দেশ বাংলা, রুপসি বাংলা ও রয়েল হাসপাতালে দেখা যায় শত শত জুতা স্যান্ডেল গেইটে রাখা হয়েছে। এসব ডেঙ্গু রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছেন। অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তবে কতজন রোগী ভর্তি রয়েছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। তবে মিডফোর্ড হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ রোগী এসেছেন জুরাইন, মুরাদপুর, মাটির মসজিদ, নাখালপাড়া, এমনকি উত্তরা থেকে। সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা নিলেও ডেঙ্গু রোগীদের ডাব, বাইরে থেকে ওষুধ ক্রয়ে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রায়ের বাজার, শেওড়াপাড়া, পল্লবী, মিরপুর-২, মাজার রোড, গাবতলী এলাকা থেকে আসার রোগীর সংখ্যা বেশি। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নন্দীপাড়া, খিলগাঁও, বাসাবো এলাকার রোগী বেশি। ঢাকা শিশু হাসপাতালে দেখা গেল, হাসপাতালের তিন তলায় ডেঙ্গু ইউনিটে ভর্তি তিন মাস ১০ দিন বয়সী শিশু মুন তাহা। গত ৭দিন আগে তার জ্বর আসে। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তিন দিন আগে ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় এনে তাকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাশের বেডে ভর্তি মিরপুর-১৪ নম্বর এলাকা থেকে আসা ৭ মাসের শিশু ইয়া হায়দার। অবিরাম কান্না করে যাচ্ছে। মা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও কাজ হচ্ছে না। গত ৭ সেপ্টেম্বর শিশুটির গায়ে জ্বর আসে। এলাকার একটি ক্লিনিকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ালেও লাভ হয়নি। দুদিন’ পর ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা শিশু হাসপাতালে এনে পরীক্ষা করার পর ১১ সেপ্টেম্বর রিপোর্টে শিশুটির ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। ওইদিনই তাকে হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। মিরপুর-১ নম্বরের বাসিন্দা কুলসুম বেগম। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১০ বছরের ছেলে মাহিনকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৭দিন তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। ৪ দিন ধরে তাকে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সে সুস্থ হয়ে উঠছে।

রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জুরাইন, মুরাদপুর, শনিরআখড়ার রোগী বেশি। এরই মধ্যেই সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮ জন মারা গেছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে জুরাইন এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা হওয়ায় এখানকার বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে। সেখানেই জন্ম হচ্ছে এডিস মশার। এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই মেয়রের কথামালায় ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে সিটি কর্পোরেশনের মানুষ ‘বিক্ষুব্ধ পুরান ঢাকার বাসিন্দারা’ নামের একটি সংগঠন ঢাকা দক্ষিণের মেয়রকে ‘এডিস মশার লার্ভা উপহার’ দিয়েছে। ডিএসসিসি’র নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু কিছুতেই মশা নিধনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বর্তমানে ঢাকার ডেঙ্গু নিধনে এডিস মশার লার্ভা অনুসন্ধান করেছে ঢাকার দুই সিটির মেয়র। ঢাকা উত্তরে মানুষের বাসা-বাড়িতে লার্ভা খুঁজে পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মানুষকে জরিমানা ও শাস্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু লার্ভা নিধন করা হয়নি। গণমাধ্যম বিশেষ করে মিডিয়ায় লার্ভা নিধনে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হলেও মশা নিধনে কার্যকর ও সময়োপযোগী কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন ২৩৪ জন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ১৮২ জন এবং ঢাকার বাইরের সারা দেশে রয়েছেন ৫২ জন। এবছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ১৫ হাজার ৬৫ জন। একই সময়ে তাদের মধ্য থেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ হাজার ৭৬১ জন রোগী। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জনের মৃত্যুর হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Jannatul Ferdous Jannatul Ferdous ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৭ এএম says : 0
সরকারের অবহেলা কারনে ডেংগু বাড়ছে। সাধারণ জনগন মারা গেলে। সরকারের কি যায় আসে। যারা আপনজন হারায় তারাই বুঁজে আপনজনের হারানো ব্যাথা
Total Reply(0)
M Robi ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৮ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সকল প্রকার রোগ থেকে হেফাজত রাখুন, আমিন!!
Total Reply(0)
M Omar Faruk ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৮ এএম says : 0
গাপ্পি মাছ হতে পারে ডেংগু প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ। একটা পূর্ণ বয়স্ক গাপ্পি দিনে শতাধিক মশার লার্ভা খায়। এবং গাপ্পি অতি নোংরা পানিতেও সুস্থভাবে বেচে থাকে। এক্ষেত্রে নগরের পানি নিষ্কাশনের ড্রেন গুলোতে অল্পদামের গাপ্পি অবমুক্ত করলে যে উপকার হবে তা শতকোটি টাকার ছিটিয়ে দেয়া ওষুধে হবে না।
Total Reply(0)
Missy Mitu ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৯ এএম says : 0
আমি যেখানে থাকি। এখন দেখি নাই ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মাশার ঔষধ দিতে।
Total Reply(0)
Mohammad Sakil ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৯ এএম says : 0
আমাদের দেশের লোক যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ করে সেই জন্য এই অবস্থা একটা ড্রাসবিন রাখতে পারেনা ময়লা আবর্জনা জন্য
Total Reply(0)
S Zahir Tutul ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৯ এএম says : 0
মারাত্মক ভয়ংকর অবস্থা।
Total Reply(0)
Kgle Mgrick ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৯ এএম says : 0
সাইন্সকে সঠিক ব্যবহার করুন ।তবে সমস্যা সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
Hillary Gomes ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৩৯ এএম says : 0
এই অভাগা দেশের মানুষের জন্য একমাত্র আল্লাহর রহমত ছাড়া অন্য কোন উপায় নাই ।।
Total Reply(0)
সাঁই মনোরঞ্জন সেন ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪০ এএম says : 0
মানুষ সতর্ক নয়, পরিবেশকে অতিষ্ঠ করছে প্রতি মুহূর্তে । অতএব ভোগান্তি উঁকিঝুঁকি যখন খুশী গৃহে দেবেই । মানুষ আর সচেতন কোন বিষয়ে হতে চায়না । জানিনা কোন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য । আগামী পৃথিবীতে মনে হয় দৌড়ে আসছে মারাত্মক কিছু, মানুষেরই যথেষ্ট অনুচিত বর্তমান বদ্ ভাবনাকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস । ভাবনার বিবর্তন ঘটানো একমাত্র দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আছে কিছু আকর্ষণীয় পথ । তা অনুসন্ধানে মনোযোগী হওয়া ।
Total Reply(0)
Milon Mukchudi ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪০ এএম says : 0
মশার সাথে ডেঙ্গুর আদৌ কোনো যোগাযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না।
Total Reply(0)
Ali ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৪৪ এএম says : 0
বাংলাদেশে সবাই যে যার ইচ্ছামত চলছে। মশাও চলছে মশার ইচ্ছামত। আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাদের মত অসহায় নাগরিকদের আর কিছু নাই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন