প্রথম ধাপের স্থগিত ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯টি পৌরসভা এবং স্থানীয় সরকার পরিষদের কয়েকটি উপ-নির্বাচনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা গতকাল শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে এসব নির্বাচনের। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব অঞ্চলে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যান চলাচল। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকেন্দ্রে মাস্ক পড়ে প্রবেশ করতে হবে ভোটারদের। বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়া কারণে ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯টি পৌরসভায় এককভাবে সরকারি দলের প্রার্থীরা সহজে জয়লাভ করবেন।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারি দলের ইচ্ছামতো এ কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিচ্ছেন। এসব ভোটে জনগণ ভোট দিতে চায় না। সরকারি দল ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছে।
ইসির যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়াও প্রত্যেক কেন্দ্রে স্যানিটাইজার ও মাস্ক থাকবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। ২০ সেপ্টেম্বর দেশের ৬টি জেলার ২৩টি উপজেলার ১৬১ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনী এলাকায় কোনও সাধারণ ছুটি থাকছে না। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবেন। এছাড়া ভোট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিতে পারবেন সাধারণ নাগরিকরা। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা পূর্বে প্রচার বন্ধ করতে হয়। সে হিসেবে ১৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত ১২টায় প্রচার কাজ বন্ধ করতে হবে। এ সময়ের পর প্রার্থী বা সমর্থকদের কেউ কোনও ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না। ওইদিন ভোট হবে খুলনা বিভাগের ৩টি জেলার ১৬টি উপজেলার ১২২টি ইউপিতে।
সব ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। কাল (আজ) প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে যাবে। ভোটারদের মাস্ক পরে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করে এই আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকেন্দ্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীসহ স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রিজাইডিং অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে ভোটকে সামনে রেখে গতকাল শনিবার রাত ১২টা হতে ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া ভোটের আগের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা হতে ভোটের দিন ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ট্রাক ও পিক আপ, লঞ্চ, স্পিডবোট এবং ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া জরুরি সেবাসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল করতে পারবে।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে দেশের ১৯টি জেলার ৬৪টি উপজেলার ৩৭১টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১১ এপ্রিল এসব নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে ওই নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে গত ২১ জুন স্থগিত ইউপির মধ্যে ২০৪টির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বাকিগুলোর ভোট আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন