চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকসান কমানো ও সেবার মান বাড়ানোর প্রতিশ্রæতি দেয়া হলেও মাত্র ৩ বছরের মাথায় পুনরায় ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণাকে অগ্রহণযোগ্য এবং রেল পরিচালনায় চরম অদক্ষতার পরিচয় বহন করে। ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ একথা বলেছেন। গতকাল (সোমবার) ‘ক্যাব’ নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে রেলওয়ের ভাড়া বৃদ্ধির আগে অনতিবিলম্বে ন্যূনতম সেবার মান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
‘ক্যাব’ বলেছে, রেলওয়ের লোকসান কমানোর জন্য ২০ বছর পর ২০১২ সালে ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ২৪ পয়সা থেকে ৩৬ পয়সায় বৃদ্ধি করা হয়েছিল। অনেক স্থানে ভাড়া বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ হয়েছিল। আবারও রেল ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে ইতোমধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত প্রস্তাব ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন ‘ক্যাব’ নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে ‘ক্যাব’ বলেছে, সংসদীয় রীতি অনুযায়ী সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু রেলের বর্তমান সেবার মান, হরিলুট, দুর্নীতি, চরম অদক্ষতা ইত্যাদি বিবেচনা না করে কমিটি কর্তৃক ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব অত্যন্ত দুঃখজনক এবং তা সাধারণ জনগণের সাথে সম্পর্কহীনতার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। ভাড়া বৃদ্ধির পূর্বে যাত্রী ও ভোক্তাদের মতামত নেয়া দরকার ছিল বলে তারা মতব্যক্ত করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, রেলপথ যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলেও রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, যাত্রীর স্বার্থরক্ষায় অনীহা, রেল বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সীমাহীন দুর্নীতিকে অব্যাহত রাখার জন্য রেল বিভাগ যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে কোন ভূমিকা নেয়নি। ফলে রেলের ভাড়া দ্বিগুণ করা হলেও সেবার মান বাড়েনি। আর রেল ব্যবস্থাপনায় ভোক্তাদের কোন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়নি।
একইসাথে রেলের বিপুল পরিমাণ সম্পদের অব্যবস্থাপনা, সেবার মান আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও দুর্নীতি, সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং রেল পরিচালনায় ভোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলেই রেল লাভজনক হতে বাধ্য বলে ‘ক্যাব’ নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।
‘ক্যাব’ নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রেলপথে যাত্রী হয়রানি, ভোগান্তি ও অনিয়মরোধে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ডিজিটাল গ্রাহকসেবাকেন্দ্র (প্রয়োজনে প্রতিকার না পেলে ডিজি, মন্ত্রী, সচিবকে অবহিত করা যায় এমন ব্যবস্থা), বর্তমান টিকেট বিক্রয় ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও ঢেলে সাজানো, কোটাপদ্ধতি বাতিল, যাত্রীদের জন্য টিকেট প্রাপ্তি সহজলভ্য করা, যাত্রীসেবার অনিয়মরোধে রেলে তাৎক্ষণিক গ্রাহকসেবা কেন্দ্র/হেলপ লাইন চালু, সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম ও যোগ্য প্রতিনিধিকে রেলস্টেশনে অবস্থান নিশ্চিত করে সপ্তাহে অন্তত এক দিন গণশুনানির আয়োজন করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রেলপথের সেবা ও ব্যবস্থাপনায় নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানান।
উক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন তারা হলেন ‘ক্যাব’ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন